close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

চলতি বছর দেশে কমতে পারে চালের উৎপাদন, বিপুল পরিমাণ খাদ্য সংকটের আশঙ্কা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বিশ্বে এক কোটি টন চালের উৎপাদন বৃদ্ধি হলেও, বাংলাদেশের চাল উৎপাদন কমে যেতে পারে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও কৃষিজমির পরিমাণ কমার ফলে দেশের খাদ্য সংকট সৃষ্টি হতে পারে। চলতি বছরে চালের উৎপাদন ৪ লাখ টন কমে যেতে..

ঢাকা, ২০২৫: সারা বিশ্বে চালের উৎপাদন এবারে প্রায় এক কোটি টন বাড়তে পারে, কিন্তু বাংলাদেশের জন্য এই বৃদ্ধির প্রভাব খুবই সীমিত থাকবে। দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, আবহাওয়া পরিস্থিতি এবং কৃষি জমির পরিমাণ হ্রাস পাওয়ার কারণে চালের উৎপাদন কমে যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অব অ্যাগ্রিকালচার (ইউএসডিএ) তাদের রিপোর্টে বলেছে, এবারের ধানের আবাদ ও উৎপাদন কমে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশে প্রায় ৪ লাখ টন চাল কম উৎপাদিত হতে পারে।

২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট চাল উৎপাদন ছিল ৩ কোটি ৭০ লাখ টন, কিন্তু ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এটি ৩ কোটি ৬৬ লাখ টনে নেমে আসতে পারে। এ কারণে খাদ্য সংকট সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত বছর ধানের আবাদ হয়েছিল ১ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে, তবে চলতি বছরে এটি ১ কোটি ১৪ লাখ হেক্টরে নামতে পারে। ধানের আবাদ কমার সাথে সাথে উৎপাদনেও ঘাটতি দেখা দিয়েছে, যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

বিশ্লেষকরা জানান, সারা দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বৃষ্টিপাতের অভাব এবং উপকরণ সংকটের কারণে আমন উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। বিশেষত, চলতি বোরো মৌসুমে উৎপাদন কম হলে দেশে চালের বাজারে বড় ধরনের ঘাটতি সৃষ্টি হতে পারে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হলে চালের মজুদ বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে।

বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির মহাসচিব, অধ্যাপক এ এস এম গোলাম হাফিজ কেনেডি বলেন, "কৃষিজমি অকৃষি খাতে চলে যাওয়ার কারণে খাদ্য উৎপাদনে হ্রাস ঘটছে। আমাদের সঠিক দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে, যাতে খাদ্যশস্য উৎপাদন ও আমদানি নির্ভরতা কমানো সম্ভব হয়।"

তিনি আরও বলেন, "চালের দাম বৃদ্ধির সাথে সাথেই চালের ঘাটতির সংকেত পাওয়া যাচ্ছে। তাই, কৃষকদের ন্যায্যমূল্য না দেওয়ার কারণে উৎপাদন আরও বাধাগ্রস্ত হতে পারে। বোরো মৌসুমে চালের সরবরাহ বাড়ানোর জন্য সরকারকে চেষ্টা করতে হবে।"

এদিকে, দেশীয় উৎপাদন নিয়ে বিভিন্ন তথ্যের অমিলও লক্ষ্য করা গেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশের চাল উৎপাদন ছিল ৪ কোটি ৬ লাখ ৯৮ হাজার টন, কিন্তু মার্কিন কৃষি বিভাগের হিসাবে তা ছিল ৩ কোটি ৭০ লাখ টন। এ ধরনের তথ্যগত অমিল কৃষির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে।

এ বিষয়ে কৃষিসচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান কালের কণ্ঠকে বলেন, "উৎপাদনের তথ্য বিভ্রাটের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে এবং আমরা সব পর্যায়ের তথ্য সঠিকভাবে যাচাই করতে কাজ করছি। আগামী বোরো মৌসুমে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য উপকরণ সরবরাহে কোনো ধরনের সংকট সৃষ্টি হতে দেব না। প্রকৃতি সহায়ক হলে আশা করছি, এই মৌসুমে উৎপাদন ভালো হবে।"

বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, কৃষি বিভাগ দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করার মাধ্যমে কৃষকদের সাহায্য করতে এবং উৎপাদন বাড়ানোর জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।


এভাবে, দেশে চালের উৎপাদন কমে যাওয়ার সম্ভাবনার বিষয়টি নিয়ে একটি বিস্তৃত বিশ্লেষণ তুলে ধরা হলো, যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে নতুন চ্যালেঞ্জের জন্ম দিতে পারে।

No comments found


News Card Generator