চলন্ত বাসে ডাকাতি-শ্লীলতাহানি: লুট করা মোবাইলের বিনিময়ে গাঁজা কেনে ডাকাতরা....

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ঢাকা থেকে রাজশাহী যাচ্ছিল ইউনিক রোড রয়েলস বাস। মধ্যরাতে অস্ত্রের মুখে বাসটিকে জিম্মি করে যাত্রীদের টাকাপয়সা ও মালামাল লুটে নেয় ডাকাত চক্র। এই ঘটনায় নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানি করা হয়। গাঁজা বিক্রেতার স..

ঢাকা থেকে রাজশাহী গামী চলন্ত বাসে ঘটে এক মর্মান্তিক ডাকাতির ঘটনা। গত সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে ঢাকার গাবতলী থেকে ছেড়ে যাওয়া ইউনিক রোড রয়েলস বাসটি (আমরি ট্রাভেলস) যখন রাজশাহীর দিকে রওনা দেয়, তখনই ঘটতে থাকে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। রাত সাড়ে ১২টার দিকে, বাসটি অস্ত্রের মুখে জিম্মি হয়ে ডাকাত চক্রের হাতে চলে যায়। ডাকাতরা বাসটিকে তিন ঘণ্টা ধরে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে যাত্রীদের থেকে টাকা, মালামাল ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র লুটে নেয়।

তবে এই ঘটনায় সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় ছিল নারীদের শ্লীলতাহানি। বাসে থাকা নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানি করা হয়, যা সামাজিকভাবে অত্যন্ত নিন্দনীয় একটি ঘটনা। পুলিশ তদন্ত শুরু করলে, কিছুদিন পর অপরাধীদের সন্ধান পাওয়া যায়, এবং মাদক কারবারিদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে ডাকাতদের শনাক্ত করা হয়।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে যে ডাকাতদের মধ্যে বেশিরভাগই মাদকাসক্ত। তারা সাভার ও আশুলিয়া এলাকায় মাদক কেনার জন্য নানা অপরাধমূলক কাজ করে থাকে। তদন্তের জন্য জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কর্মকর্তা মো. আহসানুজ্জামান নেতৃত্ব দেন এবং তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ডাকাত চক্রের সদস্যদের সন্ধান পান।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, সাভার ও আশুলিয়া এলাকায় মাদক কারবারির সঙ্গে মাদকের আদান-প্রদান চলে। মাদক কারবারির কাছ থেকে গাঁজা ও হেরোইন কিনে তারা নানা অপরাধকর্মে জড়িত থাকত। এক পর্যায়ে, সাভারের একটি পেট্রলপাম্পের সামনে মাদক বিক্রেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মাদক কারবারি জানায়, কিছুদিন আগে সে শহিদুল, সবুজ, শরীফুজ্জামানসহ কয়েকজনের কাছ থেকে মোবাইল সেটের বিনিময়ে গাঁজা বিক্রি করেছিল।

গ্রেপ্তার হওয়া মাদক কারবারির তথ্য অনুযায়ী পুলিশ অভিযান চালিয়ে, সাভারের গেন্ডা এলাকার গ্যারেজ থেকে দুই ডাকাত সদস্য মো. সবুজ ও শরীফুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে, শহিদুল ইসলাম নামে আরও একজন ডাকাত সদস্য গ্রেপ্তার হন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে, তারা সবাই ডাকাতির সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

গ্রেপ্তারকৃত ডাকাতরা হলেন শহিদুল ইসলাম (মহিদুল), সবুজ ও শরীফুজ্জামান। শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে আগে থেকেই দুটি বাসে ডাকাতি এবং তিনটি মাদক মামলা রয়েছে।

পুলিশ আরও জানায়, এই ঘটনায় জড়িত নারী যাত্রীদের ধর্ষিত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। তবে, তারা শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন। তদন্তে এখনো আরও কয়েকজন ডাকাতের নাম উঠে এসেছে, যাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে, সেজন্য পুলিশ তৎপরভাবে অভিযান চালিয়ে অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার কথা জানিয়েছে।

कोई टिप्पणी नहीं मिली