close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

চিকেন নেকে এয়া র ডি ফে ন্স সিস্টেম বসাল মোদি সরকার

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মাঝে শিলিগুড়ির চিকেন নেক এলাকায় মোদি সরকারের হঠাৎ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম বসানো ঘিরে নতুন করে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক আলোচনা ও নিরাপত্তা বিশ্লেষণ। বাংলাদেশের দিক থেকেও সতর্ক দৃষ্টি ভ..

চিকেন নেকে যুদ্ধের প্রস্তুতি! শিলিগুড়ি করিডোরে মোদি সরকারের এয়ার ডিফেন্স বসানো ঘিরে বাড়ছে রহস্য ও উদ্বেগ

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে বাড়তে থাকা উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে গোটা উপমহাদেশ। রাজনৈতিক ও কৌশলগত পরিস্থিতির দ্রুত পরিবর্তনের মধ্যে এবার ভারতের নজর পড়েছে দেশটির অন্যতম স্পর্শকাতর এলাকা — শিলিগুড়ি করিডোর, যা পরিচিত ‘চিকেন নেক’ নামে।

এই করিডোরটি ভারতের মূল ভূখণ্ডকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যের (সেভেন সিস্টারস) সঙ্গে সংযুক্ত করে। ভৌগোলিকভাবে এটি ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান এবং চীনের সংযোগস্থল। স্বাভাবিকভাবেই এই অঞ্চলটি ভারতের জন্য অত্যন্ত কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল। এই প্রেক্ষাপটেই মোদি সরকার এখানে স্থাপন করেছে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, যার মধ্যে রয়েছে ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য অত্যাধুনিক এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।

ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ধারণা করছে, হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ এখন পাকিস্তানের দিকে কিছুটা ঝুঁকে পড়েছে। যার ফলে ভারত তাদের একসময়কার ঘনিষ্ঠ বন্ধু বাংলাদেশকে হারানোর আশঙ্কায় ভুগছে। এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে সীমান্তে কঠোর নজরদারিতে।

শিলিগুড়ি করিডোরে সেনা মোতায়েন বাড়ানো হয়েছে, সীমান্তে টহল ও নজরদারি বৃদ্ধি পেয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কায় প্রস্তুতি নিচ্ছে। চীন-পাকিস্তান সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হওয়ায়, চীনের দিক থেকেও এই অঞ্চলে হুমকির সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না ভারতীয় সেনাবাহিনী।

এই পরিস্থিতিতে আশপাশের গ্রামগুলোতেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কোনো বহিরাগত যাতে সহজে ঢুকতে না পারে, সেজন্য গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। সীমান্তরক্ষী বাহিনী সরাসরি স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলছে, সন্দেহভাজনদের উপর নজর রাখা হচ্ছে এবং প্রত্যেক আগত ব্যক্তিকে কঠোরভাবে চেক করা হচ্ছে।

চোপড়ার বাসিন্দা মইদুল ইসলাম জানান, “বিএসএফ নিয়মিত আমাদের গ্রামে আসছে, কথা বলছে। আগে এমন নজরদারি ছিল না। এখন কে আসছে, কে যাচ্ছে সব খবর রাখছে তারা।” একই সঙ্গে বাংলাদেশি গাড়িচালক সিকন্দর বললেন, “আগে জাল লাইসেন্স নিয়ে অনেকে পার হয়ে যেত। এখন ছয়বার পর্যন্ত চেক করা হয়। কাশ্মীরের ঘটনার পর থেকেই এসব কড়াকড়ি চলছে।”

চিকেন নেক সংলগ্ন সেবকের করোনা‌শন ব্রিজ, যা ভৌগোলিকভাবে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি সংযোগপথ, সেখান থেকেও চীনের দিকে প্রবেশের একটি রুট রয়েছে। এছাড়াও জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার হয়ে ভুটানে প্রবেশ সম্ভব, যা এটিকে আরো বেশি কৌশলগত করে তোলে। পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যদের রাতেও টহল দিতে দেখা যাচ্ছে। এক পুলিশ সদস্য জানান, “এখন এমন পাহারা চলছে যা আগে ছিল না। আমরা রাতেও টহলে থাকছি।”

এছাড়া ভারত-নেপাল সীমান্তে সাধারণ নাগরিকদের চলাচলেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। পানি ট্যাংকি চেকপয়েন্টে শুধুমাত্র নেপালি নাগরিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে, অন্য কাউকে নয়। এমন কড়াকড়ি নজিরবিহীন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রাও।

এই অবস্থায় মোদি সরকারের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সহ উত্তরবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব, ডিরেক্টর জেনারেল (ডিজি) ও অন্যান্য নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মূল আলোচ্য ছিল সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ।

তবে বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলছেন—বাংলাদেশকে ঘিরে এত ভয় কেন? বাংলাদেশের সাম্প্রতিক কূটনৈতিক অবস্থান কি সত্যিই ভারতের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে? নাকি এটি ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বার্তা? এসব প্রশ্ন এখন রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের আলোচনার কেন্দ্রে।

সামগ্রিকভাবে, শিলিগুড়ি করিডোরে ভারত সরকারের এই কঠোর পদক্ষেপ শুধু যুদ্ধ প্রস্তুতিরই ইঙ্গিত দিচ্ছে না, বরং উপমহাদেশীয় ভূরাজনীতির ভবিষ্যত হিসাব-নিকাশেও বড় প্রভাব ফেলতে চলেছে বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।

कोई टिप्पणी नहीं मिली