close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

চেন্নাইতে শেখ হাসিনার প্রকাশ্যে আসার ছবি প্রচার, যা জানা গেল..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ভারতের চেন্নাইয়ে শেখ হাসিনার চোখের চিকিৎসার ভিডিও বলে ভাইরাল এক ফুটেজ ঘিরে তোলপাড় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। দাবি করা হয়, ভারতের নিরাপত্তায় তিনি মহাত্মা গান্ধী হাসপাতালে যান। কিন্তু আসল সত্য কী? রিউমর স্ক..

ভাইরাল ভিডিওতে চেন্নাইয়ে শেখ হাসিনার উপস্থিতি? আসল ঘটনা যা সামনে এলো

গত বছরের ৫ আগস্ট বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। এরপর থেকেই তার অবস্থান নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হতে থাকে। অনেকেই ধারণা করেছিলেন তিনি ভারতের আশ্রয়ে রয়েছেন, তবে এর কোনও নিশ্চিত প্রমাণ মেলেনি এতদিন।

সম্প্রতি আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন শেখ হাসিনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওকে ঘিরে ফের শুরু হয়েছে বিতর্ক। ভিডিওতে দাবি করা হয়, শেখ হাসিনা ভারতের চেন্নাইয়ে অবস্থিত মহাত্মা গান্ধী হাসপাতালে গিয়েছেন চোখের চিকিৎসার জন্য, আর এই সফরের সময় ভারতীয় সরকারের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যেই নাকি তিনি ছিলেন।

ভিডিওটি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় বিভিন্ন ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেল এবং একাধিক টুইটার অ্যাকাউন্টে। অনেকেই দাবি করেন, এই ভিডিওই প্রমাণ করে শেখ হাসিনা এখনো ভারতের শরণে আছেন এবং সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। রাজনৈতিক অঙ্গনে এ নিয়ে চরম আলোড়ন দেখা দেয়।

কিন্তু এসব দাবি খতিয়ে দেখে ‘রিউমর স্ক্যানার’ নামক ফ্যাক্টচেক প্ল্যাটফর্ম। অনুসন্ধানে তারা যেটি তুলে ধরে, তা সম্পূর্ণ ভিন্ন বাস্তবতা। তারা জানায়, ভাইরাল ভিডিওটি মোটেই নতুন নয়, বরং এটি ২০১৬ সালের।

মূলত, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শেখ হাসিনা কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান। কানাডার মন্ট্রিলে ‘পঞ্চম রিপ্লেনিশমেন্ট কনফারেন্স অব দ্য গ্লোবাল ফান্ড (জিএফ)’ অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেন। ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি তখন নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি (JFK) বিমানবন্দরে ধারণ করা হয়, যেখানে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পুরনো ভিডিওকে ব্যবহার করে বিভ্রান্তি

রিউমর স্ক্যানারের তদন্তে আরও জানা যায়, এই একই ভিডিও অতীতে আরও একাধিকবার ভুয়া দাবির সঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে। ভিডিওর দৃশ্যগুলোতে কোনো স্থানে মহাত্মা গান্ধী হাসপাতালের কোনো চিহ্ন বা ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি নেই।

তদন্তকারীরা ভিডিওটির মূল সোর্স চিহ্নিত করে নিশ্চিত করেন যে এটি ভারতের চেন্নাইয়ে নয়, বরং নিউইয়র্কে ধারণ করা। এছাড়া, শেখ হাসিনা বর্তমানে কোথায় অবস্থান করছেন—সেই বিষয়ে এখনো কোনো নির্ভরযোগ্য উৎস নিশ্চিত তথ্য দেয়নি। ফলে ভিডিওটির ভিত্তিতে তার বর্তমান অবস্থান নিয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যায় না।

উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা?

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শেখ হাসিনার অবস্থান নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়িয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতেই এই পুরনো ভিডিওকে নতুন বলে উপস্থাপন করা হচ্ছে। অতীতে এ ধরণের তথ্য বিকৃতির নজির রয়েছে, এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সহজলভ্যতার কারণে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

রিউমর স্ক্যানার জানিয়েছে, তারা ভবিষ্যতেও এ ধরণের বিভ্রান্তিমূলক ভিডিও ও তথ্য চিহ্নিত করে যথাসময়ে প্রকৃত তথ্য তুলে ধরবে।


 

শেখ হাসিনার চেন্নাইয়ে যাওয়ার যে ভিডিওটি নিয়ে এত আলোচনা, সেটি আসলে ২০১৬ সালের নিউইয়র্ক সফরের ভিডিও—এটা নিশ্চিত করেছে রিউমর স্ক্যানার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল যে কোনো তথ্য যাচাই ছাড়া বিশ্বাস করা যেমন বিপজ্জনক, তেমনি তা জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্যও ব্যবহৃত হতে পারে।

نظری یافت نشد


News Card Generator