সোহরাওয়ার্দী কলেজের ছাত্র রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে এসেছেন এক সময়ের নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগকর্মী সাকিল। অভিযোগ উঠেছে, ছাত্রলীগের লেবাস পাল্টে এখন তিনি সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদলের ছত্রছায়ায় থেকে ক্যাম্পাসে নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিক হয়রানির অভিযোগ
গতকাল সোহরাওয়ার্দী কলেজে অনুষ্ঠিত “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন”-এর সংবাদ সম্মেলন কাভার করতে যাওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির এক সদস্যের ফোন কেড়ে নিয়ে তাকে হেনস্তা করার অভিযোগ ওঠে সাকিলের বিরুদ্ধে।
ঘটনার পর সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ইমরান হোসেন কলেজে উপস্থিত হয়ে ছাত্রদল সভাপতি জসিমউদ্দীনের কাছে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন। পরে জসিম সাকিলকে দুঃখ প্রকাশ করতে বলেন এবং ভবিষ্যতে এমন আচরণ না করার বিষয়ে সতর্ক করেন।
ছাত্রলীগের লেবাস বদলে ফেসবুক আইডিও বদল?
৫ আগস্ট স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের পর যখন শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগ করেন, তখন সাকিল নিজের রাজনৈতিক পরিচয় ঢেকে ছাত্রদলের ব্যানারে সক্রিয় হতে শুরু করেন—এমন দাবি করছেন সোহরাওয়ার্দী কলেজের একাধিক শিক্ষার্থী।
তারা জানান, সাকিল পুরনো ফেসবুক আইডি (এস, বি সাকিল আহমেদ) বন্ধ করে নতুন আইডি খোলেন। আগের আইডিতে তার ছাত্রলীগের কার্যক্রম ও আওয়ামী লীগের পক্ষে পোস্ট করার প্রমাণ ছিল। বিশেষ করে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস এবং ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের কর্মসূচি নিয়ে পোস্ট করা স্ক্রিনশটও শিক্ষার্থীদের হাতে এসেছে।
বিভাগীয় গ্রুপ থেকে বহিষ্কার
একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সাকিলের ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতা সামনে আসার পর তার নিজ বিভাগের মেসেঞ্জার গ্রুপ থেকে তাকে বের করে দেওয়া হয়। ব্যাচের একজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিরুদ্ধে ছিল। সাধারণ শিক্ষার্থীদের হুমকি দিত। আমরা সবাই জানি সে ছাত্রলীগ করত।”
সাকিলের দাবি: ‘আমি ছাত্রলীগ করি না, ওই আইডিও আমার না’
এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সাকিল বলেন, “যে আইডির কথা বলা হচ্ছে সেটা আমার না। আমার ছাত্রলীগ করার কোনো প্রমাণ কেউ দেখাতে পারলে আমি যে শাস্তি দিবেন, মাথা পেতে নেব। আমার পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।”
ছাত্রদলের অবস্থান: ‘ছাত্রলীগের দোসরদের কোনো জায়গা নেই’
সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি জসিমউদ্দীন বলেন, “আমরা স্পষ্টভাবে বলছি, ছাত্রদলে ছাত্রলীগের কোনো দোসরের জায়গা হবে না। যদি কেউ লুকিয়ে থেকে থেকে আমাদের মধ্যে ঢুকে পড়ে, তদন্ত করে তাকে বাদ দেওয়া হবে। সাকিলের বিষয়ে আমি খোঁজ নিয়েছি—সে ছাত্রলীগ করত না। আইডিগুলোর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে, তা দেখে বোঝা যায়।”