ছাত্রদলের কর্মকাণ্ড ‘নব্য ফ্যা'সিবা'দে'র’ ইঙ্গিত বহন করছে: অ'ভি'যো'গ ছাত্রশিবির নেতার..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ফরিদপুর থেকে শেকৃবি—নারী নিপীড়ন ও হুমকির ঘটনায় ছাত্রদলের বিরুদ্ধে তীব্র অভিযোগ তুললেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা সাদিক কায়েম। একদিনে তিনটি বিতর্কিত ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি ছাত্রদলের আচরণকে ফ্যাসিবাদী..

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম এক ভিডিও বার্তায় ছাত্রদলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনে বলেন, "ক্ষমতায় না এসেই যারা নব্য ফ্যাসিস্ট আচরণ করছে, ক্ষমতায় গেলে তাদের আচরণ কত ভয়ঙ্কর হবে তা সহজেই অনুমেয়।" শুক্রবার (৩০ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।

সাদিক কায়েমের ভাষ্য অনুযায়ী, একদিনে ছাত্রদলের বিরুদ্ধে তিনটি গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। প্রথমত, ফরিদপুরের নগরকান্দায় বৈশাখি নামের এক ছাত্রী ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় তাকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। মারধর করেছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরাই—এমনটাই তার অভিযোগ।

দ্বিতীয় অভিযোগটি এসেছে রাজধানীর আদাবর থানা এলাকা থেকে। সেখানে বিএনপির এক নেতা প্রকাশ্যেই এক নারীকে হুমকি দিয়ে বলেন, “জিন্দেগি বরবাদ করে দেব।” সাদিক কায়েম মন্তব্য করেন, এ ধরনের বক্তব্য শুধু ব্যক্তিগত হুমকি নয়, বরং নারীর নিরাপত্তা ও সম্মানের ওপর সরাসরি আঘাত।

তৃতীয় ও সবচেয়ে বিতর্কিত ঘটনা ঘটেছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি)। সেখানে ছাত্রদলের একটি অনুষ্ঠানে যোগ না দেওয়ায় দুই ছাত্রীকে হল ছাড়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। অভিযোগের তীর ছাত্রদলের এক নেত্রীর দিকে।

এই তিনটি ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সাদিক কায়েম বলেন, “নারীর নিরাপত্তা নিয়ে যারা উচ্চবাচ্য করে, তাদের এসব ঘটনার বিষয়ে সরাসরি অবস্থান নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু বাস্তবতা হলো, একটি নির্বাচিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে মব তৈরি করাই তাদের লক্ষ্য। এটা নারীর নিরাপত্তার প্রশ্ন নয়—এটা নিছকই রাজনৈতিক স্বার্থের খেলা।”

তিনি আরো দাবি করেন, দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রদলের সন্ত্রাসী তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। কুয়েট, তিতুমীর কলেজ, সোহরাওয়ার্দী কলেজ, গ্রাফিক্স আর্ট কলেজ, কক্সবাজার পলিটেকনিক, ঢাকা পলিটেকনিক, শ্রীপুর কলেজ, তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসাসহ বহু শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রদল ইতিপূর্বে সন্ত্রাসে লিপ্ত হয়েছে।

তিনি এও বলেন, “আজ শেকৃবিতে যা ঘটেছে, তা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি ছাত্রলীগীয় কায়দায় ক্ষমতার অপব্যবহার ও ভয়ের রাজনীতি কায়েম করার একটি ধারাবাহিক প্রচেষ্টা। ছাত্রলীগ যেভাবে পূর্বে হল নিয়ন্ত্রণ করেছে, ঠিক একইভাবে আজ ছাত্রদলও সে পথে হাঁটছে।”

বক্তব্যের শেষভাগে সাদিক কায়েম হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “ক্ষমতায় না এসেই যারা এই রকম ফ্যাসিস্ট আচরণে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে, তারা ক্ষমতায় গেলে কী করবে তা ভেবে শঙ্কিত হতে হয়। দেশের জান-মালের ওপর এই ধরনের আধিপত্য বরদাশত করা হবে না। জনগণ এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে, এটাই সময়ের দাবি।”

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই বক্তব্যটি প্রকাশের পরপরই ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। ছাত্রদলের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে শেকৃবিসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে এই ইস্যু ঘিরে উদ্বেগ ও আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, রাজনৈতিক সংগঠনের ছাত্র শাখাগুলোর কর্মকাণ্ড যদি এভাবে ভয়ভীতি ও হুমকির পর্যায়ে চলে যায়, তবে শিক্ষাঙ্গনগুলোতে গণতান্ত্রিক চর্চা ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়বে। এই ঘটনার দ্রুত তদন্ত ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থী মহল।

نظری یافت نشد