চট্টগ্রাম কমার্স কলেজে ইসলামি ছাত্রশিবিরের স্থাপিত ‘হেল্প ডেস্ক’-এ ছাত্রদলের হামলার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি সাদিক কায়েম। হামলার ঘটনার পর শনিবার বিকেলে নিজের ফেসবুক পেইজে তিনি এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন এবং ছাত্রদলের বিরুদ্ধে কঠোর ভাষায় বক্তব্য দেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, "শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার উদ্দেশ্যে ছাত্রশিবির হেল্প ডেস্ক স্থাপন করেছিল। কিন্তু এই ভালো কাজটাই ছাত্রদলের সন্ত্রাসীদের সহ্য হয়নি। তারা অতর্কিতে হেল্প ডেস্ক ভেঙে ফেলে এবং দায়িত্বে থাকা ছাত্রশিবির নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালায়।"
শুধু চট্টগ্রামে নয়, রংপুর পুলিশ লাইনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সেবা দিতে স্থাপিত হেল্প ডেস্কেও একই ধরনের নৃশংস হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। সাদিক কায়েম অভিযোগ করেন, "রংপুরে ছাত্রশিবিরের হেল্প ডেস্কে হামলা করেছে স্থানীয় 'চিড়িয়াখানা গ্যারেজ' কর্তৃপক্ষ, যা ছিল পরিকল্পিত এবং পেশিশক্তিনির্ভর আক্রমণ।"
তার ভাষায়, দেশে ছাত্রকল্যাণমূলক কাজে উৎসাহ দেওয়া তো দূরের কথা, বরং এমন মানবিক কাজ করলেই হামলার শিকার হতে হয়। তিনি বলেন, “যেখানে ভালো কাজ নিয়ে প্রতিযোগিতা হওয়ার কথা, সেখানে এখন দেখা যাচ্ছে সেই কাজ বন্ধ করতে সন্ত্রাসী কায়দায় আক্রমণ চলছে।”
সাদিক কায়েম আরো বলেন, “ছাত্রদলের নেতৃত্বে আবার ক্যাম্পাসে মারামারি, রক্তপাত, আর খুনোখুনির পুরনো রাজনীতি ফিরে আসছে। এমন অবস্থায় ছাত্ররাজনীতির নামে যদি সন্ত্রাস অব্যাহত থাকে, তাহলে কোনো রাজনৈতিক সংগঠন কিংবা সাধারণ শিক্ষার্থী কেউই নিরাপদ থাকবে না।”
এ সময় তিনি একটি সতর্ক বার্তাও উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, “আমরা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিতে চাই, যদি ছাত্রদল বা অন্য কোনো গোষ্ঠী সন্ত্রাসের পথ বেছে নেয়, তাহলে ছাত্র-জনতাকে সাথে নিয়ে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। এই ছাত্র-জনতা জুলাইয়ের ইতিহাস গড়েছে। তারা কোনো নিপীড়ন কিংবা সন্ত্রাসের মুখে মাথানত করবে না।”
তিনি আশা প্রকাশ করেন, “এই সন্ত্রাসী শক্তিকে পরাজিত করে শান্তিপূর্ণ ও কল্যাণমুখী ছাত্ররাজনীতির ধারা আবার প্রতিষ্ঠিত হবে। ইন শা আল্লাহ।”
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার বক্তব্য ছড়িয়ে পড়ায় ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মহলে আলোচনার জন্ম নিয়েছে। ছাত্রদলের পক্ষ থেকে এখনো এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে পরিস্থিতি যেভাবে উত্তপ্ত হচ্ছে, তাতে করে দেশের উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্ররাজনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।