close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

চাঁদাবাজি প্রতিরাধে কঠোর নির্দেশনা যশোর জেলা পুলিশের

সুভাষ মজুমদার avatar   
সুভাষ মজুমদার
ঈদুল আজহাকে নির্বিঘ্ন করতে জাল টাকার কারবার, ছিনতাই, হাইওয়ের পাশে পশুহাট চলবে না..

ঈদুল আজহাকে নির্বিঘ্ন, নিরাপদ করতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের। সন্ত্রাসী চাঁদাবাজির বেলায় শূণ্য সহিষ্ণু নীতি গ্রহন করা হয়েছে। যে কোনো অপতৎপরতা রুখে দিতে সিনিয়র অফিসারদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে।কোরবানির পশু পরিবহন নির্বিঘ্ন করা, এক হাটের পশু জোর করে অন্য হাটে না নেওয়া, হাইওয়ের পাশে পশুরহাট না বসানো, জাল টাকা, ছিনতাই ও চাঁদাবাজি প্রতিরোধ, মার্কেট ও শপিংমলের নিরাপত্তা প্রদানে সতর্কতার সাথে দায়িত্ব পালনেরও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সশস্ত্র অপরাধী, চরমপন্থী ও বিদ্রোহ (ইনসারজেন্সি) প্রবণ এলাকায় পুলিশি কার্যক্রমের সময় অবশ্যই প্রয়োজন অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্ধারিত অস্ত্র বহন করবে পুলিশ। পুলিশ হেড কোয়াটার্স থেকে এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে যশোর জেলা পুলিশে সূত্র জানিয়েছে।আইজিপি বাহারুল ইসলাম পিপিএম পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে দেশের সকল জেলা পুলিশ সুপার, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজিগণের সাথে ভার্চুয়াল সভায় আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে এ নির্দেশনা দিয়েছেন বলে তথ্য মিলেছে। আর ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে ২৮ মে যশোরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন হল রুমে জেলার পশু হাটের ইজারাদার, ব্যাংক কর্মকর্তা, চামড়া ব্যবসায়ী ও লবণ ব্যবসায়ীদের সাথে জেলা পুলিশের আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভাও অনুষ্ঠিত হয়। পুলিশ হেডকোয়াটার্সের নির্দেশনা ও জেলা পুলিশের মতবিনিময় সভার আলোকে কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।যশোর জেলা পুলিশে দায়িত্বশীল সূত্র থেকে তথ্য মিলেছে, অন্যান্য সময়ের তুলনায় ঈদের আগে চুরি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে থাকে প্রতি বছরই। ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন মার্কেটে আসা ক্রেতা সাধারণ, পথচারী, এমনকি ঘরমুখো মানুষও শিকার হন অপরাধী ও অসাধু চক্রের অপতৎপরতার। বিশেষ করে ভোরে ও রাতে এ ঘটনা বেশি ঘটে। আগের বিভিন্ন ঘটনা আমলে নিয়ে পুলিশকে এবার আগাম প্রস্তুতি নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ঈদকে সামনে রেখে চুরি ছিনতাই ডাকাতি জাল টাকার কারবারসহ অপরাধী চক্র যাতে কোনো অপতৎপরতা চালাতে না পারে সে জন্য নিরাপত্তা জোরদার করতেও বলা হয়েছে। পশুবাহী কোনো বাহনকে নির্দিষ্ট গন্তব্যের আগে পথে থামানো যাবে না। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ বাহারুল আলম বিপিএম আসন্ন ঈদুল আযহা উৎসবমুখর পরিবেশে নিরাপদে উদযাপনের লক্ষ্যে আন্তরিকভাবে কাজ করার জন্য মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের বিশেষ দিক নির্দেশ দিয়েছেন।তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন, ঈদুল আযহা উপলক্ষে দেশের পুলিশের সকল ইউনিট সম্মিলিতভাবে দায়িত্ব পালন করবে।


পুলিশ সদস্যদের অস্ত্র ব্যবহার নিয়েও ভার্চুয়াল সভায় দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, পুলিশ সদস্যদের অস্ত্র ব্যবহারের প্রাধিকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্ধারিত করা আছে। মাঠ পর্যায়ে যেকোনো পুলিশি কার্যক্রম যেন ঝুঁকিমুক্ত থাকে সে বিষয়টি বিবেচনায় রেখে অস্ত্রের প্রাধিকার নির্ধারণ করা হয়। পুলিশের টহল কার্যক্রম বা সশস্ত্র অপরাধী, চরমপন্থী ও বিদ্রোহ (ইনসারজেন্সি) প্রবণ এলাকায় পুলিশি কার্যক্রমের সময় অবশ্যই প্রয়োজন অনুযায়ী পুলিশ অস্ত্র বহন করবে।তথ্য মিলেছে, ওই সভায় আরো বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে পুলিশের অস্ত্র ব্যবহার পর্যালোচনার বিষয়টি শুধুমাত্র জনশৃঙ্খলা রক্ষায় অর্থাৎ মিছিল-সমাবেশ নিয়ন্ত্রণের বেলায়ই উঠে এসেছে। মিছিল সমাবেশ নিয়ন্ত্রণে জীবনবিধ্বংসী মারণাস্ত্র ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা স্বভাবতই প্রশ্নবিদ্ধ। এই বিষয়টিই বর্তমানে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হচ্ছে। ওই সভা থেকে যেসকল লাইসেন্সধারী সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী অস্ত্র জমা দেননি তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজুর জন্য মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন আইজিপি।


ওই সভায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে অতিরিক্ত আইজিপি মতিউর রহমান শেখ, স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত আইজিপি গোলাম রসুল, অতিরিক্ত আইজিপি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) খোন্দকার রফিকুল ইসলাম, ডিআইজি (অপারেশনস) রেজাউল করিম, ডিআইজি (কনফিডেন্সিয়াল) কামরুল আহসান এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।


জেলা পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, ঈদুল আযহার আগে পরে যশোর শহরে যানজট রোধে ও সার্বিক নিরাপত্তায় শহর ও শহরতলীতে পুলিশি টহল বাড়ানোর কাযক্রম শুরু হয়েছে। যে কোনো অপতৎপরতা রুখে দিতে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স সতর্ক অবস্থানে রাখা হবে। নিয়মিত টহল ছাড়াও অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স কাজ করবে উৎসবের আগে ও পরের কয়েক দিন পর্যন্ত। শহরের ব্যস্ত সড়ক মোড় ও ব্যস্ত মার্কেটে গড়ে তোলা হচ্ছে নিরাপত্তা বলয়। অপরাধীদের প্রতি জিরো টলারেন্স ভূমিকায় সক্রিয় থাকবে পুলিশ। যশোর পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে সিনিয়র অফিসার ও ফাঁড়ি ইনচার্জদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যে বিশেষ নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।


এ ব্যাপারে যশোরের পুলিশ সুপার রওনক জাহান জানিয়েছেন, যশোরের পশুর হাটে আগত ক্রেতা ও বিক্রেতার নিরাপত্তার জন্য থাকছে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন। তারা পশুর হাট ও এর আশপাশের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে। ঈদ ও পশুর হাটকে সামনে রেখে ব্যাংকসমূহকে জাল টাকা প্রতিরোধে পশু হাটগুলোতে জাল টাকা শনাক্তকরণে মেশিনের ব্যবস্থা রাখার অনুরোধ করেন পুলিশ সুপার।তিনি আরো জানান, সাদা পোশাকে এবং ইউনিফর্মে পুলিশ কাজ করবে। কোন ধরণের চাঁদাবাজির চেষ্টা করলে নেয়া হবে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সংশ্লিষ্ট সকলকে অধিক সতর্ক থাকতে হবে।

לא נמצאו הערות