টাঙ্গাইলের নাগরপুরে নিঃসন্তান ও একাকী বৃদ্ধা নুরজাহান বেগম হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। সম্পত্তি দখলের লোভে নির্মম এই খুনের পেছনে ছিল সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে স্বর্ণালঙ্কার লুট করে মরদেহ ফেলে যায় ঘাতকরা। মামলার দুই প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঘটনার মাস্টারমাইন্ড বাঘের বাড়ি গ্রামের তোফায়েল হোসেন ওরফে তোফা মেম্বার (৪২)। হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেওয়া অপর আসামি ভোলা জেলার চর ফ্যাশনের ফকির কান্দি গ্রামের কালাম মিয়া (৩৮) কে ৫ মে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরদিন নিজ বাড়ি থেকে তোফা মেম্বারকেও গ্রেফতার করা হয়।
৮ মে সকালে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে নাগরপুর থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম জানান, নিহত নুরজাহান বেগম উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের খামার ধল্লা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি নিঃসন্তান এবং স্বামী-সন্তানহীন অবস্থায় বসবাস করতেন। তার জমিজমার প্রতি লোভ পড়ে তোফা মেম্বারের। জমি দখলের কৌশল ব্যর্থ হওয়ায় শেষ পর্যন্ত হত্যার পরিকল্পনা করে সে।
১২ মার্চ সকালে গম, ভুট্টা ও পায়রার শিষ কুড়াতে বের হন নুরজাহান বেগম। সন্ধ্যা পর্যন্ত বাড়ি না ফেরায় খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে রাতেই রতনের তামাকক্ষেতে তার মরদেহ পাওয়া যায়। ১৩ মার্চ নিহতের ভাতিজা অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করে নাগরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তদন্তে নামে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে কালাম মিয়া ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তার ভাড়া নেওয়া বাসা থেকে উদ্ধার হয় নিহতের রুপার বালা। এরপর গ্রেফতার করা হয় মূল পরিকল্পনাকারী তোফা মেম্বারকে।
ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, “এটি একটি ক্লুলেস হত্যাকাণ্ড ছিল। আমরা সফলভাবে রহস্য উদঘাটন করতে পেরেছি। একজন আসামি জবানবন্দি দিয়েছেন, অপরজন রিমান্ডে রয়েছে। তদন্ত চলছে—আর কেউ জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”