বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, মোটা চালের দাম কেজি প্রতি ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা, পাইজাম চাল ৫৫ থেকে ৫৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা এক সপ্তাহ আগের তুলনায় দুই-এক টাকা বেশি। মূল্যবৃদ্ধির কারণসমূহ হিসেবে বাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন, মিলার ও পাইকারি পর্যায়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী মজুতদারি ও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চালের দাম বৃদ্ধি করছেন। তাদের মতে, এই সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে বাজার স্থিতিশীল হবে না।
কিছু ব্যবসায়ী দাবি করেন, সরবরাহ চেইনে কিছু সমস্যার কারণে চালের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, বর্তমানে সরকারি গুদামে ১৮ লাখ ৬৫ হাজার ৮১৪ টন খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে, যার মধ্যে চালের পরিমাণ ১৩ লাখ ৫২ হাজার ৮৪৬ টন। আন্তর্জাতিক বাজারে চালের মূল্যবৃদ্ধি ও আমদানি শুল্কের পরিবর্তনও স্থানীয় বাজারে প্রভাব ফেলতে পারে। তবে সরকার ইতোমধ্যে আমদানি শুল্ক কমিয়ে চালের দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
চালের দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ ভোক্তারা বিপাকে পড়েছেন। বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের খাদ্য ব্যয় বেড়ে গেছে, যা তাদের জীবিকা নির্বাহে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করছে। অনেকেই সরকারের কাছে বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
সরকার চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির অনুমতি প্রদান, আমদানি শুল্ক কমানো এবং খোলা বাজারে (ওএমএস) স্বল্পমূল্যে চাল বিক্রির মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সরকারের গুদামে পর্যাপ্ত চাল মজুত রয়েছে, যা প্রয়োজনে বাজারে সরবরাহ করা হবে।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক মুস্তফা কে মুজেরী মনে করেন, নিত্যপণ্যের দাম কমাতে উৎপাদন বৃদ্ধি ও সঠিক বিপণন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি। তিনি বলেন, "চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের নিত্যপণ্যের উৎপাদন বাড়াতে হবে। আর যেসব পণ্য আমদানি করে চাহিদা মেটাতে হয়, সেসব পণ্যের যেন ঘাটতি না হয় সেজন্য আগে থেকেই সরকারের পরিকল্পনা থাকতে হবে।"
চালের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও মূল্যবৃদ্ধি একটি জটিল সমস্যা, যা মজুতদারি, সরবরাহ চেইনের সমস্যা এবং আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাবের সঙ্গে সম্পর্কিত। সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলোর কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে এবং ভোক্তাদের স্বস্তি প্রদান করতে বাজার তদারকি ও নিয়ন্ত্রণে আরও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন।
 'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  
  
 
		 
				 
			



















 
					     
			 
						 
			 
			 
			 
			 
			 
			