রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের উপর বোতল নিক্ষেপের ঘটনায় আটক হওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইশতিয়াক হুসাইনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে তার মুক্তি আন্দোলন থামাতে পারেনি। উল্টো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) চত্বর থেকে শুরু হয়েছে নতুন ঢেউ—ঘেরাওয়ের হুমকি, প্রতিবাদের আগুন, আর অধিকারের দাবিতে গর্জে ওঠা ছাত্রসমাজ।
ঘটনার সূত্রপাত বুধবার (১৪ মে) রাতে। তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম কাকরাইল মসজিদের সামনে আন্দোলনরত জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে, হঠাৎ করে একটি পানির বোতল ছুঁড়ে মারা হয়। বোতলটি সরাসরি গিয়ে লাগে উপদেষ্টার মাথায়। মুহূর্তেই আলোড়ন সৃষ্টি হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ঘটনার ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে বৃহস্পতিবার রাতে ইশতিয়াক হুসাইনকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। জানা যায়, সে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ, এরপর মুক্তি:
শুক্রবার সকালে ইশতিয়াককে ডিবি কার্যালয়ে এনে দীর্ঘ সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম নিজে কার্যালয়ে এসে ইশতিয়াক ও তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন এবং সবকিছু শুনে নিজেই তাকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান। এমনকি আন্দোলন শেষে বাসায় বেড়াতে আসার আমন্ত্রণও জানান ইশতিয়াককে।
তবে শিক্ষার্থীরা থামেনি।
ইশতিয়াকের আটকের খবরে শুক্রবার দুপুরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীরা সরাসরি ঘোষণা দেয়—ইশতিয়াকের কোনো ক্ষতি হলে ডিবি অফিস ঘেরাও করা হবে। ক্যাম্পাসজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে স্লোগান—
“আমার ভাইয়ের কিছু হলে, ডিবি অফিস ঘেরাও হবে”,
“বিপ্লবে বলিয়ান, নির্ভীক জবিয়ান”,
“এক দুই তিন চার, হল আমার অধিকার”।
জবি শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আরিফিন বলেন, “ইসতিয়াক আমাদের ছোট ভাই। তাকে কোনো অভিযোগ ছাড়াই তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ডিবি বলছে ‘জিজ্ঞাসাবাদ’, কিন্তু আমরা জানি কীভাবে হয় তা। যদি আমাদের ভাইয়ের ক্ষতি হয়, জবির হাজারো শিক্ষার্থী একযোগে ঘেরাও দেবে ডিবি অফিস।”
ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী অনিন্দ্য রায় বলেন, “একটি বোতলের বিপরীতে যদি রাষ্ট্র টিয়ারশেল, গুলি ও রক্ত ব্যবহার করে—তাহলে তা চূড়ান্ত অন্যায়। আমরা সেটা মেনে নেব না। যেকোনো মূল্যে প্রতিবাদ চলবে।