ঢাকার বনশ্রীতে গত ৮ মার্চ সংঘটিত একটি ডাকাতি মামলায় দুই জন গ্রেফতার হয়েছেন, যাদের মধ্যে একজন ছাত্রলীগ নেতা এবং অপরজন শ্রমিক দলের নেতা। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ রয়েছে, যার মধ্যে ডাকাতি এবং অস্ত্রের ব্যবহারও রয়েছে।
প্রথম ব্যক্তি হলেন মো. আমিনুল ইসলাম (২৮), যিনি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা মো. ইকবাল মৃধা। আমিনুল একজন পেশাদার ডাকাত, যিনি আগে একাধিক ডাকাতি মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন এবং অস্ত্রসহ ধরা পড়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে চলমান তদন্তে বেরিয়ে আসে, তিনি একাধিক ডাকাতির নেতৃত্বে ছিলেন। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে তাকে সাত জন সহ গ্রেফতার করা হয়েছিল এবং দীর্ঘদিন জেলে থাকার পর জামিনে মুক্তি পান। সম্প্রতি আবারও বনশ্রীতে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার হন তিনি।
আরেকজন গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তি হলেন মো. সুমন মোল্লা (৩০), যিনি একই উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের আয়নাবাজ গ্রামের বাসিন্দা এবং ইউনিয়ন শ্রমিক দলের ৪ নম্বর ওয়ার্ড শাখার সভাপতি। সুমনও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপির কেন্দ্রীয় ও উপজেলা শ্রমিক দলের নেতাদের ছবি সংযুক্ত ফেস্টুন ছড়িয়ে পড়ে, যা স্থানীয়দের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
জানা গেছে, আমিনুল এবং সুমন একাধিক অপরাধী দলের সদস্য হিসেবে পরিচিত। তাদের গ্রেফতার হওয়ার পর পুলিশ কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে, এদের বিরুদ্ধে আরও তদন্ত চলছে এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়া, পুলিশ সূত্রে জানা গেছে যে, ডাকাতির ঘটনায় বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি, এমপিপুত্র রায়হান সাকিব, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং কালাইয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ অনেক রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে আমিনুলের ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে, যা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে।
এ বিষয়ে বাউফল উপজেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক হাসান মাহমুদ মঞ্জু বলেন, "আমি তাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। সে কীভাবে কমিটিতে যোগ দিল, তা আমার জানা নেই। তবে ইউনিয়ন শ্রমিক দল তাকে বহিষ্কার করার নির্দেশ দিয়েছে।" ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি আবুল বশার সিকদার জানান, সুমনকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বাউফল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম বলেন, "আমিনুল একজন পেশাদার ডাকাত এবং ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল। আগেও তাকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়েছিল। জামিনে মুক্ত হয়ে সে আবারও এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।"
এদিকে, এই ঘটনাটি এখন স্থানীয়দের মধ্যে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। পুলিশ প্রশাসন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলছে তদন্ত এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ।