পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে এফবি মায়ের দোয়া নামক একটি মাছ ধরার ট্রলার ডুবির ঘটনায় ২০ জন জেলের মধ্যে ১৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুরে কুয়াকাটার গঙ্গামতি এলাকা থেকে ১৪ জন জেলেকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এর আগে সকালে পায়রা বন্দরের ২০ কিলোমিটার গভীর সাগর থেকে অপর একটি মাছ ধরার ট্রলার আরও ১ জন জেলেকে উদ্ধার করে।
উদ্ধার হওয়া জেলেদের মধ্যে রয়েছেন তৌহিদ ইসলাম (১৮), মো. মোরশেদ (২০), মো. হেলাল (২২), সাজ্জাদ (২২), শেখ অপু (২২), মো. নুরুল হাসান (২৫), আলী (২৬), আনসার (২৭), ফয়সাল (২৮), আনিস (২৮), বাদশা মাঝি (৩২), আবুল কাশেম (৪০), কবির (৪৫), নুরুল আলম (৬০) এবং সোহাগ (২০)।
এ ঘটনায় এখনো নিখোঁজ রয়েছেন আবু তাহের (৫৫), কামাল (৩৫), রিয়াজ উদ্দিন (২২), তমিজ (১৮) ও শাহাবুদ্দিন (৪৫)। উদ্ধারকৃত ও নিখোঁজ জেলেরা চট্টগ্রামের বাঁশখালী এলাকার বাসিন্দা। বর্তমানে উদ্ধারকৃত জেলেরা কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
উদ্ধারকৃত জেলেরা জানিয়েছেন, গত ১৪ আগস্ট রাতে চট্টগ্রামের বাঁশখালী থেকে ওই ট্রলারটি ১৯ জন জেলেসহ মাছ ধরতে সমুদ্রে যায়। প্রবল ঝড়ো বাতাসে ট্রলারটি ডুবে যায়। ট্রলারডুবির পর তারা প্লাস্টিকের পানির ড্রাম নিয়ে ভেসে থাকেন। পরে অন্য জেলেরা তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী জানিয়েছেন, ‘উদ্ধার হওয়া জেলেদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাদের শরীরে পানিশূন্যতা ও শারীরিক দুর্বলতা দেখা দিলেও সবাই আশঙ্কামুক্ত।’
কুয়াকাটা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বিকাশ মন্ডল জানান, ‘নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারের জন্য কোস্টগার্ডকে অবহিত করা হয়েছে। উদ্ধারের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’
এই ঘটনা সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও মাছ ধরার ক্ষেত্রে ঝুঁকির দিক তুলে ধরেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমুদ্রপথে যাতায়াতকারী মাছ ধরার ট্রলারগুলোর জন্য উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও আবহাওয়া পূর্বাভাসের ওপর গুরুত্বারোপ করা উচিত। এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং জেলেদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
এই ঘটনা সামুদ্রিক জীবনধারার সঙ্গে জড়িত মানুষের জন্য একটি জাগরণ হিসেবে কাজ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে যাতে জেলেদের জীবন সুরক্ষিত থাকে।