কানাডা—একটি দেশ যার নাম ক্রিকেট বিশ্বে তুলনামূলকভাবে কম উচ্চারিত হয়। কিন্তু এবার সেই কানাডা-ই জায়গা করে নিল ২০২৬ সালের আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। নিজ দেশের মাটিতে বাহামাসকে বিধ্বস্ত করে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করল তারা।
গতকাল কিং সিটিতে অনুষ্ঠিত আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে বাহামাসকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে স্বাগতিক কানাডা। এই জয়ের মাধ্যমে টানা পাঁচ ম্যাচে অপরাজিত থেকে বিশ্বকাপে নিজেদের জায়গা পাকাপোক্ত করেছে দলটি। বাছাইপর্বে তাদের এখনও একটি ম্যাচ বাকি থাকলেও, তার আর কোনো প্রভাব পড়বে না—কেননা তারা ইতোমধ্যেই শীর্ষস্থান নিশ্চিত করে ফেলেছে।ম্যাচের শুরুতে টস জিতে বাহামাসকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় কানাডা। আর তারপরই শুরু হয় কানাডিয়ান পেস আক্রমণের ঝড়। বাঁহাতি পেসার কালিম সানা এবং ডানহাতি মিডিয়াম পেসার শিবম শর্মা একের পর এক উইকেট তুলে নিতে থাকেন।
মাত্র ৫৭ রানে গুঁড়িয়ে যায় বাহামাসের ইনিংস। কালিম ও শিবম—দুজনই তুলে নেন ৩টি করে উইকেট। এই বিধ্বংসী বোলিং পারফরম্যান্সই কানাডার জয়ের ভিত্তি গড়ে দেয়।
মাত্র ৫৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বিধ্বংসী শুরু করেন দিলপ্রীত বাজওয়া। ১৪ বলে অপরাজিত ৩৬ রানের এক ঝড়ো ইনিংস খেলে মাত্র ৫.৩ ওভারে জয় নিশ্চিত করেন তিনি। সেইসঙ্গে নিশ্চিত হয় কানাডার বিশ্বকাপে অভ্যুত্থান।
২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ – যে টিমগুলো ইতোমধ্যেই জায়গা করে নিয়েছে
আগামী বছর ভারত ও শ্রীলঙ্কার যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হবে ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। আয়োজক দেশ দুইটিসহ আগে থেকেই নিশ্চিত হয়ে আছে ১০টি দলের অংশগ্রহণ:
-
ভারত
-
শ্রীলঙ্কা
-
আফগানিস্তান
-
অস্ট্রেলিয়া
-
বাংলাদেশ
-
ইংল্যান্ড
-
দক্ষিণ আফ্রিকা
-
যুক্তরাষ্ট্র
-
ওয়েস্ট ইন্ডিজ
-
আয়ারল্যান্ড
-
নিউজিল্যান্ড
-
পাকিস্তান
এখনো খালি ৭টি জায়গা – চলছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই
বিশ্বকাপের মূল পর্বে এখনো সাতটি দল জায়গা পায়নি। এই সাতটি স্পট পূরণ হবে আঞ্চলিক বাছাইপর্বের মাধ্যমে।
-
ইউরোপ অঞ্চল: ৫–১১ জুলাই
-
আফ্রিকা অঞ্চল: ১৯ সেপ্টেম্বর–৪ অক্টোবর
-
এশিয়া ও ইস্ট-এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চল: ১–১৭ অক্টোবর
এখান থেকে আরও সাতটি দল বিশ্বকাপের মঞ্চে জায়গা করে নেবে।
কানাডার জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত
এই প্রথমবার নয়, তবে এত শক্তিশালী এবং আত্মবিশ্বাসী পারফরম্যান্স আগে কখনও দেখায়নি কানাডা। এবারের বিশ্বকাপে তাদের অংশগ্রহণ শুধু টিকিট কাটাই নয়, বরং একটি বড় বার্তা—ক্রিকেটে উদীয়মান শক্তি হিসেবেই তারা এখন মাথা তুলছে।
ক্রিকেট দুনিয়ায় কানাডার উত্থান নিঃসন্দেহে একটি প্রেরণাদায়ক গল্প। যারা এখনো তাদের হালকাভাবে নিচ্ছিল, তাদের জন্য এটাই সতর্কবার্তা—“কানাডা এখন আর দর্শক নয়, খেলোয়াড়!”