বিএনপিপন্থি ৩ উপদেষ্টাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে: নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী তিনজন বিএনপিপন্থি উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে জড়িত আখ্যা দিয়ে তাদের পদত্যাগে বাধ্য করার হুমকি দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে বিএনপির দ..

বিএনপি-ঘেঁষা উপদেষ্টাদের দিয়ে রাষ্ট্র ধ্বংসের চক্রান্ত চলছে—পদত্যাগে বাধ্য করা হবে: নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী

নতুন করে রাজনৈতিক উত্তেজনার জন্ম দিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী। তিনি কটাক্ষ করে জানিয়েছেন, উপদেষ্টা প্যানেলে থাকা বিএনপিপন্থি তিনজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে দেশের স্বার্থে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে। তার ভাষায়, “এই তিনজন ব্যক্তির কার্যকলাপ সরাসরি বাংলাদেশের আইন, অর্থনীতি ও পরিকল্পনাকে ধ্বংস করার একটি সুপরিকল্পিত চক্রান্তের অংশ।”

এই মন্তব্য তিনি করেন বুধবার (২১ মে) সকালে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে।

সমাবেশের মূল দাবি: ইসি পুনর্গঠন ও নির্বাচন স্থগিত

সমাবেশে অংশ নেওয়া এনসিপি নেতারা সরাসরি নির্বাচন কমিশনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের দাবি, “এই নির্বাচন কমিশন তড়িঘড়ি করে গঠন করা হয়েছে এবং এটি সম্পূর্ণরূপে বিতর্কিত। আমরা মনে করি, এটি বিএনপির দালালি করছে। তাই কমিশনের সকল সদস্যের পদত্যাগ একান্ত প্রয়োজন।”

নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী আরও বলেন, “যেভাবে জনগণ এই কমিশনকে প্রত্যাখ্যান করেছে, আমরাও সেই পথেই হাঁটবো। ইসি পুনর্গঠন ছাড়া এনসিপি দেশের কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না।”

তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “জাতীয় নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত কোনো স্থানীয় নির্বাচন করতে দেয়া হবে না। এটি যদি চেষ্টা করা হয়, তবে দেশের মানুষ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।”

বিএনপি-ঘেঁষা উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে তীব্র অভিযোগ

নাসির উদ্দীন পাটোয়ারীর সবচেয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য আসে উপদেষ্টা প্যানেলের তিনজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে নিয়ে।

তিনি বলেন,

“আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ—এই তিনজনই বিএনপির হয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। এই তিনজন দেশের ভেতরে থেকে রাষ্ট্রবিরোধী চক্রান্তে লিপ্ত।”

সালেহউদ্দিন আহমেদকে তিনি সরাসরি ‘ভারতের দালাল’ বলে অভিহিত করেন এবং বলেন,

“আপনি ভারতের প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশ ধ্বংস করছেন। দেশপ্রেম থাকলে এখনই পদত্যাগ করুন।”

অধ্যাপক আসিফ নজরুলকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন,

“জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে আপনার টালবাহানা দেশদ্রোহিতার সামিল। এই ঘোষণাপত্র না দিলে আপনাকে দেশে থাকতে দেয়া হবে না।”

বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সম্পর্ক নিয়েও বিস্ফোরক মন্তব্য

সমাবেশে আরও দাবি করা হয়, বিএনপি এখন ‘লাশের রাজনীতি’ শুরু করেছে। বিক্ষোভকারী নেতাদের ভাষায়,

“বিএনপি এখন আওয়ামী লীগের অর্থে বড় বড় কথা বলছে। এমনকি তারা নগর ভবন পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছে। এটি প্রমাণ করে, বিএনপি এখন নিজের আদর্শ বিসর্জন দিয়ে অন্যের পৃষ্ঠপোষকতায় পথ চলছে।”

নেতারা আরও জানান, যদি নির্বাচন কমিশনের বর্তমান সদস্যরা পদত্যাগ না করেন এবং কমিশন পুনর্গঠন না করা হয়, তাহলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দেবেন।

 

জাতীয় নাগরিক পার্টির এই বিক্ষোভ সমাবেশ এবং নেতাদের বক্তব্য নতুন রাজনৈতিক আলোচনার সূত্রপাত করেছে। বিশেষ করে বিএনপি ঘেঁষা উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে সরাসরি পদত্যাগের হুমকি এবং ভারতের হস্তক্ষেপের অভিযোগ দেশের রাজনীতিতে নতুন বিতর্ক তৈরি করেছে।

Nenhum comentário encontrado