close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

বিভাজনের রাজনীতি আবার শুরু হয়েছে: মির্জা ফখরুল

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ফেসবুক পোস্টে সরাসরি অভিযোগ করেছেন—সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ভেতরে অনুপ্রবেশ করে দেশকে ভিন্ন পথে নিতে চায় একটি গোষ্ঠী। শুরু হয়েছে নতুন করে বিভাজনের রাজনীতি। কী আছ..

আবারও ষড়যন্ত্রের আভাস, দেশে ফিরছে বিভাজনের রাজনীতি: মির্জা ফখরুল

বাংলাদেশে আবারও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিভাজনের রাজনীতি—এমন চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)'র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার (২১ মে) সকাল ৭টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে তিনি এ উদ্বেগজনক বার্তা দেন। এতে তিনি দাবি করেন, বর্তমান সরকার ও তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি বিশেষ গোষ্ঠী দেশে ইচ্ছাকৃতভাবে বিভক্তি সৃষ্টি করতে চাইছে এবং সরকারের বিভিন্ন ইনস্টিটিউশন বা প্রতিষ্ঠানকে একে অপরের মুখোমুখি দাঁড় করানোর গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।

ফেসবুক পোস্টে ফখরুল লেখেন—
আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন, বিভাজনের রাজনীতি আবার শুরু হয়েছে। এখানে গোত্রে গোত্রে বিভাজন সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকারের বিভিন্ন ইনস্টিটিউশনগুলোকে পরস্পরের মুখোমুখি করার একটা ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত শুরু করা হয়েছে।

তিনি আরও যোগ করেন,
"আমরা দেখতে পারছি, কিছু মানুষ সরকারের মধ্যে অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে বাংলাদেশকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে, ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার পরিকল্পনা করছে।"

এমন বক্তব্যের মাধ্যমে বিএনপি মহাসচিব আবারও সরকার এবং রাষ্ট্রযন্ত্রে বিদ্যমান অভ্যন্তরীণ উত্তেজনা ও ষড়যন্ত্রের একটি ইঙ্গিত তুলে ধরলেন, যা দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত।


ফখরুলের মতে, বিএনপি এখন জাতীয় দায়িত্বের সম্মুখভাগে

মির্জা ফখরুল তার পোস্টে শুধু অভিযোগেই সীমাবদ্ধ থাকেননি। বরং তিনি বিএনপির ওপর বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতির দায়িত্বের ভার তুলে ধরেন। তিনি লিখেন—
"বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ওপরে সবসময় গুরুদায়িত্ব এসে পড়ে। সেই দায়িত্ব হচ্ছে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার দায়িত্ব, সেই দায়িত্ব হচ্ছে বাংলাদেশকে আবার নতুন করে গড়ে তোলার।"

তিনি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্বপ্নের কথা স্মরণ করে বলেন,
"যে স্বপ্ন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেখেছিলেন, আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যে স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার কাজ শুরু করেছিলেন—সেই ধারাবাহিকতায় এখন তারেক রহমান নতুন স্বপ্নের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার নেতৃত্ব দিচ্ছেন।"

এই বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব দলের বর্তমান নেতৃত্বকেও সামনে নিয়ে আসেন। বিশেষভাবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ভবিষ্যতের রূপকার হিসেবে তুলে ধরেন তিনি।


ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় প্রস্তুত বিএনপি নেতাকর্মীরা

ফেসবুক বার্তার শেষভাগে ফখরুল বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা দেশের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত সজাগ ও সচেতন হয়ে কাজ করে যান।

"তাদের (তারেক রহমান, জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া) স্বপ্নগুলোকে ও বাংলাদেশের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষাগুলোকে বাস্তবায়িত করার জন্য বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মীকে অত্যন্ত সজাগ ও সচেতনভাবে তাদের কাজ করতে হবে এবং রুখে দাঁড়াতে হবে যে কোনো ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের বিরুদ্ধে।"

এই কথাগুলো থেকে স্পষ্ট, দলীয় কর্মীদের মাঝে নতুন করে উদ্দীপনা ছড়াতে চাচ্ছেন তিনি এবং ভবিষ্যতের রাজনৈতিক লড়াইয়ের জন্য মানসিক প্রস্তুতির বার্তাও দিয়েছেন।


 পেছনে কি নতুন কোনো ঘটনা?

বিভাজনের রাজনীতির ইঙ্গিত কেন এখন? রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের প্রশাসনিক বিভিন্ন দপ্তরে অস্থিরতা, মতানৈক্য এবং রাজনৈতিক দলের মধ্যে উত্তপ্ত বক্তব্য পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করছে। মির্জা ফখরুলের এমন পোস্ট হয়তো এই অস্থির প্রেক্ষাপটের প্রতিচ্ছবি।

বিএনপির পক্ষ থেকে সরকারের বিরুদ্ধে আগে থেকেই 'রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্র', 'দমন-পীড়ন' ও 'গণতন্ত্রহীনতার' অভিযোগ রয়েছে। এবার সেই অভিযোগে নতুন মাত্রা যোগ হলো—রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের মুখোমুখি দাঁড় করানোর ষড়যন্ত্রের অভিযোগ।


 

মির্জা ফখরুলের এই ফেসবুক পোস্ট কেবল একটি রাজনৈতিক বার্তাই নয়—এটি দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি বড় সতর্কবার্তা। বিভাজনের রাজনীতির অভিযোগ, সরকারের ভেতরে অনুপ্রবেশের কথা এবং দলের কর্মীদের রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান—সবকিছু মিলিয়ে এটি স্পষ্টভাবে একটি রাজনৈতিক যুদ্ধের প্রস্তুতির ঘোষণা।

לא נמצאו הערות