জমি বিক্রি করতে গিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিক্ষোভে পড়ে আলোচনায় আসেন জামালপুর-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক ভূমিমন্ত্রী রেজাউল করিম হীরা। মঙ্গলবার (২৭ মে) শেরপুর শহরে এ ঘটনা ঘটার পর তাঁকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে মামলা না থাকায় এবং বার্ধক্যজনিত শারীরিক অসুস্থতা বিবেচনায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জামালপুর থানা পুলিশ।
৮৩ বছর বয়সী রেজাউল করিম হীরা ওইদিন বিকেলে তার স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে শেরপুর সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে জমি বিক্রির উদ্দেশ্যে উপস্থিত হয়েছিলেন। এ সময় হঠাৎ করেই স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা সেখানে উপস্থিত হয়ে তাকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে শেরপুর সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে ও তার স্ত্রীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুবায়দুল আলম গণমাধ্যমকে জানান, “শেরপুরে তার (রেজাউল করিম হীরা) বিরুদ্ধে কোনো মামলা না থাকায় আমরা তাকে জামালপুর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছি।”
পরবর্তীতে জামালপুর সদর থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকাকালে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলা না পাওয়া এবং বয়সজনিত নানা জটিলতা, যেমন শারীরিক দুর্বলতা ও স্মৃতিশক্তি হ্রাস, বিবেচনায় নেওয়া হয়।
জামালপুর সদর থানার ওসি আবু ফয়সল মো. আতিক বলেন, “রেজাউল করিম হীরা বর্তমানে বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছেন। তাঁর স্মৃতিশক্তিও দুর্বল হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের মামলা পাওয়া যায়নি। এসব কারণ বিবেচনায় নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে তার স্ত্রী ও এক আত্মীয়কে জিম্মাদার করে তাকে বাসায় পাঠানো হয়েছে।”
ঘটনাটি ঘিরে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ আলোচনা চলছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের হঠাৎ এই বিক্ষোভের উদ্দেশ্য ও সময়টি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই এটিকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখছেন।
রেজাউল করিম হীরা জামালপুরের মুসলিমাবাদ এলাকার বাসিন্দা। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন যুক্ত ছিলেন এবং ভূমিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর বয়স ও শারীরিক অবস্থা বর্তমানে যেভাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে, তাতে এ ধরনের পরিস্থিতি তার জন্য মারাত্মক হতে পারত বলেও অভিমত দিয়েছেন অনেকে।
ঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশ, প্রশাসন ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি যাতে আর না ঘটে, সেজন্য সতর্কতা অবলম্বনের কথা বলেছেন।