টাঙ্গাইলের ভুঞাপুরে শিশুদের টিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় স্বাস্থ্যকর্মীরা এই টিকা দিচ্ছেন শিশুদের। তবে উপজেলার অলোয়া ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডে নলুয়া এলাকায় একাই টিকা দিচ্ছেন স্বাস্থ্য সহকারি বিলকিস খাতুন।
যদিও ওই কেন্দ্রে সেবা দানে আরেকজন স্বাস্থ্য সহকারি নুরুল ইসলাম নুরু থাকার কথা ছিল। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যান না, দেন না সরকারি সেবা। অধিকাংশ সময় তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বসে আড্ডা দেন। এর আগেও নুরু
সরেজমিনে দেখা যায়, নলুয়া গ্রামের নাজমুল ডাক্তারের বাড়ির টিকাদান কেন্দ্রে গিয়ে স্বাস্থ্যকর্মী নুরুল ইসলাম নুরুকে পাওয়া যায়নি। সেবাগ্রহীতারাও চিনেন না তাকে। প্রায় ৩০জন সেবাগ্রহীতার সাথে কথা বলে জানা গেছে তিনি কমিউনিটি ক্লিনিক ও টিকাদান কেন্দ্রে যান না।
গত ২৮ মে উপজেলায় শিশুদের টিকা কার্যক্রম শুরু হয়। দুইদিনব্যাপী চলে এই কার্যক্রম।
জানা যায়, একজন স্বাস্থ্য সহকারি তার নির্ধারিত এলাকায় নিয়মিত টিকাদান কার্যক্রম করবে। এছাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা পরামর্শ, কমিউনিটি ক্লিনিকে দুইদিন সেবা বিষয়ক পরামর্শ, কিশোরীদের টিকাদান ও পরামর্শ, যক্ষারোগীদের হাসপাতালে পাঠানো, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া রোগীদের পাঠানো ও স্বাস্থ্য শিক্ষা কার্যক্রম রয়েছে।
অন্যদিকে টিকা কার্যক্রমের আগেরদিন থেকেই সেবাগ্রহীতাদের সাথে যোগাযোগ করতে হয় স্বাস্থ্য সহকারিদের। কিন্তু কেন্দ্রে না যাওয়ায় এসবের কোন কাজই করেন না স্বাস্থ্য সহকারি নুরুল হক নুরু।
অনেকের দাবি উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক (ইনচার্জ) আব্দুল কাইয়ুমকে ম্যানেজ করেই নাকি তিনি দীর্ঘদিন এভাবেই অফিস ফাঁকি দিয়ে বেতন উত্তোলন করে যাচ্ছেন।
এদিকে গত ২০২২ সালের ২ সেপ্টেম্বর উপজেলার ৭নং ওয়ার্ডের রেহাই গাবসারা এলাকার গাবসারা কমিউনিটি ক্লিনিকের পাশের একটি ডোবায় বিপুল পরিমাণ মেয়াদ উত্তীর্ণ সরকারি ঔষধ পাওয়া যায়। তখন ওই ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সহকারি নুরুল ইসলাম নুরু দীর্ঘদিন ধরে সরকারি ওষুধ রোগীদের না দিয়ে নিয়মিত তিনি ফার্মেসিতে বিক্রি করে করেছেন এমন অভিযোগ দিয়েছিল রোগীরা। সে সময় তিনি ওই ক্লিনিকেও নিয়মিত যেতেন না। পরে এই সংবাদ টি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ভাবে ভাইরালও হয়। এতে ওষুধ উদ্ধারের ঘটনায় সেখান থেকে তাকে নামমাত্র বদলীও করা হয়। তবুও তিনি পাল্টাননি তার চরিত্র।
স্থানীয়রা জানান, টিকাদান কেন্দ্রে কোন সময় নুরু আসেন নি। কমিউনিটি ক্লিনিকেও আসেন না। তিনি প্রভাবশালী নেতা তাই কাউকে কেয়ারও করেন না। উর্ধ্বতনদের যোগসাজস ছাড়া তিনি এভাবে ফাঁকি দিতে পারে না। তবে তার সহকর্মী বিলকিস নিয়মিত টিকাদান কেন্দ্রে আসেন এবং শিশু ও কিশোরীদের টিকাদান করেন।
অলোয়া ইউনিয়নের নলুয়া গ্রামে টিকাদান কেন্দ্রের স্বাস্থ্যসহকারি বিলকিস খাতুন মোবাইলে জানান, নুরু ভাই কেন্দ্রে এখনও আসেনি। তিনি রাস্তায় আছেন আসতেছে। এরপরই কেন্দ্রে গিয়ে বিলকিসের ভিডিও বক্তব্য চাইতেই তিনি বলেন, নির্ধারিত সময় থেকেই একাই টিকা দিচ্ছি শিশুদের। নুরু ছুটিতে আছেন বলে জেনেছি।
স্বাস্থ্য সহকারি নুরুল হক নুরু জানান, ওইদিন ভাতিজা হঠাৎ করে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছিল তাই ছুটি নিয়েছিলাম। এছাড়া নিয়মিতই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাই সবাই জানে।
উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক (ইনচার্জ) আব্দুল কাইয়ুম জানান, তিনি তিন দিনের ছুটিতে আছেন। নিয়ম মেনেই কেন্দ্রে যান। তবে তিনি নুরুর ছুটির কোন অফিসিয়াল তথ্য দিতে পারেননি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আব্দুস সোবাহান বলেন, আপনারা কবে গিয়েছিলেন? তিনি সেদিন ছুটিতে ছিল। আমার বক্তব্য এতটুকুই।



















