close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

ভোলায় ভে'ঙে যাওয়া বাঁধ মেরামতে বাংলাদেশ নৌবাহিনী

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ঘূর্ণিঝড় ও অস্বাভাবিক জোয়ারে ভেঙে যাওয়া ভোলার তজুমদ্দিন এলাকার বাঁধ মেরামতে এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। দ্রুত পদক্ষেপে স্থানীয়দের মাঝে ফিরে এসেছে স্বস্তি, আতঙ্ক কাটিয়ে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা।..

ভোলার উপকূলীয় তজুমদ্দিন উপজেলার সুচগেট এলাকায় ভয়াবহ জোয়ারের আঘাতে সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁধ ভেঙে যায়। নদীর পানি হু হু করে গ্রামে ঢুকে পড়ে। এতে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকাবাসীর মাঝে। তবে এই সংকটের মুহূর্তেই উদ্ধারকাজে এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। শনিবার, ৩১ মে দুপুর ১২টার দিকে নৌবাহিনীর একটি দল বাঁধ মেরামতের কাজে সরাসরি অংশ নেয়।

স্থানীয় প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে এবং সাধারণ মানুষের সক্রিয় সহযোগিতায় শুরু হয় বাঁধ পুনঃনির্মাণের কাজ। নৌবাহিনীর আগমন যেন আশার আলো হয়ে দেখা দেয়। এলাকাবাসী তাদের আন্তরিকতা ও পেশাদারিত্বে মুগ্ধ। বাঁধ ভাঙার ঘটনার পর মানুষ যখন উদ্বিগ্ন এবং দিশেহারা, তখনই বাংলাদেশ নৌবাহিনীর দ্রুত সাড়া যেন তাদের মনের মধ্যে নতুন শক্তি জোগায়।

একজন স্থানীয় বাসিন্দা আবেগ ভরে বলেন, “বাঁধ ভাঙার পর আমরা খুব আতঙ্কে ছিলাম। ঘরবাড়ি ডুবে যাবে কি না—এই ভয় তাড়িয়ে বেড়াচ্ছিল। কিন্তু নৌবাহিনী যখন এল, মনে হলো কেউ পাশে আছে। এখন অনেকটা নিশ্চিন্ত বোধ করছি।”

নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, “প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আমরা ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি। বাঁধটি যত দ্রুত সম্ভব মেরামত করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।”

উল্লেখযোগ্য যে, সাম্প্রতিক সময়ে ঘূর্ণিঝড় ও অস্বাভাবিক উচ্চতার জোয়ারের ফলে ভোলার একাধিক এলাকায় বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূলতা ও জলস্তরের অস্বাভাবিক ওঠানামা এসব দুর্যোগকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, উপকূলীয় এলাকায় টেকসই ও আধুনিক বাঁধ নির্মাণ ছাড়া উপায় নেই। এই প্রেক্ষাপটে নৌবাহিনীর মতো রাষ্ট্রীয় বাহিনীর দ্রুত সাড়া ও মেরামতের কাজ বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।

বাংলাদেশ নৌবাহিনী ইতোমধ্যেই একাধিক উপকূলীয় অঞ্চলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তারা শুধু বাঁধ মেরামতেই নয়, বরং প্রয়োজন হলে উদ্ধার, ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তাও দিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, সুচগেট এলাকার বাঁধটি কেবল একটি বাঁধ নয়—এটি এলাকাবাসীর জীবন ও জীবিকার প্রতীক। এই বাঁধ টিকিয়ে রাখা মানে হচ্ছে হাজারো মানুষের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। তাই তারা দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করায় নৌবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

অন্যদিকে, স্থানীয় প্রশাসন জানায়, মেরামতের কাজ যতক্ষণ না সম্পূর্ণ হচ্ছে, ততক্ষণ সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখা হবে এবং প্রয়োজনে অতিরিক্ত জনবল মোতায়েন করা হবে।

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিপূর্ণ এই সময়ে সমুদ্র উপকূলের মতো স্পর্শকাতর এলাকায় দুর্যোগ মোকাবিলায় রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সক্রিয় ভূমিকা সাধারণ মানুষের জীবনে স্বস্তি ও সাহস ফিরিয়ে আনছে—এই বাস্তবতা যেন আবারও প্রমাণ করলো ভোলার সুচগেট বাঁধ রক্ষার এই প্রয়াস।

Geen reacties gevonden


News Card Generator