close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

ভবেশ চন্দ্র রায়ের মৃত্যু নিয়ে ভারতের অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর’—প্রেস সচিবের কড়া প্রত্যাখ্যান..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ভারতের দাবি ভবেশ চন্দ্র রায়ের মৃত্যু হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ধারাবাহিকতা—এই বক্তব্য সরাসরি প্রত্যাখ্যান করলেন বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব। বললেন, ‘বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘ..

দিনাজপুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা ভবেশ চন্দ্র রায়ের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানালেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। শনিবার রাত ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে তিনি বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান পরিষ্কারভাবে তুলে ধরেন।

প্রেস সচিবের ভাষ্য অনুযায়ী, “এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে ভবেশ চন্দ্র রায়ের মৃত্যুকে একটি পরিকল্পিত নিপীড়নের অংশ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এটি পুরোপুরি ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যেখানে সকল ধর্মের মানুষ নিজ নিজ অধিকার নিয়ে বসবাস করে। সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্যের অভিযোগ যে ভিত্তিহীন, তা বারবার বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাও স্বীকার করেছে। সরকার কখনোই ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে কোনো নাগরিককে অবহেলা করে না।”

ভবেশ চন্দ্র রায়ের মৃত্যু প্রসঙ্গে শফিকুল আলম বলেন, “আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে তিনি পূর্বপরিচিত কিছু ব্যক্তির সঙ্গে বাইরে গিয়েছিলেন। তার পরিবারের কেউই এ ঘটনায় কোনো সন্দেহজনক তথ্য দেননি। ময়নাতদন্তে তার শরীরে কোনো দৃশ্যমান আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এরপরও মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নির্ধারণে ভিসেরা বিশ্লেষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “ভিসেরা রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কোনো পক্ষ যেন বিভ্রান্তিকর বা উসকানিমূলক বক্তব্য না দেয়, সেজন্য সবাইকে আহ্বান জানানো হচ্ছে। কারণ এমন মন্তব্য জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে এবং অপ্রয়োজনীয় উত্তেজনার জন্ম দিতে পারে।”

এদিকে শনিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ভবেশ চন্দ্র রায়ের ঘটনাকে ‘বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর সংগঠিত নিপীড়নের ধারাবাহিকতা’ হিসেবে উল্লেখ করে। এক্সে প্রকাশিত বিবৃতিতে মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার প্রবণতা বাড়ছে। ভবেশ চন্দ্র রায়ের অপহরণ ও নির্মম হত্যাকাণ্ড তার প্রমাণ।”

তিনি আরও দাবি করেন, “এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বরং একটি দীর্ঘমেয়াদি নিপীড়নের অংশ। এ ধরনের ঘটনার দায়ীরা বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।”

তবে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা এবং অধিকার নিশ্চিত করতে সরকার সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ভবেশ চন্দ্র রায়ের মৃত্যুকে ঘিরে ভারতের এমন মন্তব্য শুধু কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘনই নয়, বরং তা মিথ্যাচারের আশ্রয়ে একপেশে রাজনৈতিক বক্তব্য হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।

বাংলাদেশ সরকারের এই প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে যে, সরকার কোনোভাবেই আন্তর্জাতিক মহলে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াতে দিতে রাজি নয়। ভবিষ্যতেও ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সকল নাগরিকের অধিকার রক্ষায় সরকার দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে যাবে।

No comments found


News Card Generator