নিজস্ব প্রতিবেদক, মুরাদনগর (কুমিল্লা) |
মুরাদনগর উপজেলার ভবানীপুর গ্রামে শনিবার রাত ১২টার দিকে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে স্থানীয় ইউপি সদস্য জজ মিয়া মেম্বারের বাড়ির পাশে রাখা গরুর খড়ের গাদা সম্পূর্ণভাবে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুন লাগার সময় সবাই ঘুমিয়ে থাকায় প্রথমে কিছু বুঝে উঠতে না পারলেও হঠাৎ ধোঁয়া ও আগুনের আলো দেখে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এই ঘটনায় প্রাণহানি না ঘটলেও প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত মেম্বার। পরিবারটি বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতা ও আতঙ্কে সময় পার করছে।
রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে আগুনের হাহাকার
শনিবার দিবাগত রাত ঠিক ১২টার দিকে জজ মিয়া মেম্বারের বাড়ির পেছনে রাখা গরুর খড়ের গাদায় হঠাৎ আগুন ধরে যায়। অল্প সময়ের মধ্যেই আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে পুরো খড়ের স্তূপে। আগুনের তাপ ও আলো টের পেয়ে প্রথমে পরিবারের সদস্যরা এবং পরে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে আগুন নেভাতে চেষ্টা করেন।
পরে স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। যদিও আগুন নেভাতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়, এবং এরই মধ্যে খড়ের গাদা সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে পড়ে।
জজ মিয়া মেম্বার বললেন—‘পরিকল্পিতভাবে আগুন দেওয়া হয়েছে’
ঘটনার পর ক্ষতিগ্রস্ত মেম্বার জজ মিয়া বলেন,
“আমার বাড়ির চারপাশে আগুন লাগার মতো কিছু ছিল না। এটি পরিকল্পিতভাবে কেউ করেছে বলেই মনে করছি। এই খড়গুলো গরুর খাবারের জন্য আমি অনেক কষ্ট করে জোগাড় করেছিলাম। এখন আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
তিনি আরও জানান, “আমি চাই প্রশাসন এ ঘটনায় দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনুক।”
প্রতিবেশীদের মধ্যে উৎকণ্ঠা ও প্রশাসনের আশ্বাস
এলাকাবাসী জানান, এই ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনার ফলে গ্রামে ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই রাতে ঘুমাতে পারছেন না। গ্রামের প্রবীণ এক বাসিন্দা বলেন,
“এখন রাতের বেলায় পাহারা ছাড়া উপায় নেই। আমরা চাই প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নিক।”
স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন,
“এটি একটি সুপরিকল্পিত ঘটনা হতে পারে। তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করা হোক।”
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান,
“ঘটনাস্থল আমরা পরিদর্শন করেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
শেষকথা: একখণ্ড খড়ের গাদা জ্বলল, কিন্তু পুড়ল আস্থা ও নিরাপত্তা
ভবানীপুরের এই অগ্নিকাণ্ড শুধু একটি খড়ের গাদা নয়, গ্রামের মানুষের নিরাপত্তা ও মানসিক স্থিতিও পুড়িয়ে দিয়েছে। প্রশাসনের সঠিক পদক্ষেপ ও অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করাই হতে পারে এ ভয়ের স্থায়ী সমাধান।
---
✍️ প্রতিবেদন: অনিক হাসান | স্থানীয় সংবাদদাতা