শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা:
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ এর সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া ঠেলে দেওয়া ৭৫ জন বাংলাদেশী ও তিনজন ভারতীয় নাগরিককে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
রবিবার (১১ মে '২৫) রাত ১১টার দিকে তাদেরকে কোষ্টগার্ড সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানায় সোপর্দ করে। উদ্ধারকৃত বাংলাদেশীদের বাড়ি নড়াইল, খুলনা, যশোর ও বরিশাল জেলায়। তাদের অধিকাংশই দুই মাস থেকে ৩৭ বছর ধরে বিভিন্ন মেয়াদে ভারতের গুজরাট রাজ্যের আমেদাবাদ ও সুরাট শহরে বসবাস করতো।
মামলার আসামীরা হলেন, খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার ফুলবাড়িয়া গ্রামের খালিদ শেষের ছেলে আব্দুর রহমান (২০), নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের মুন্না শাহ এর ছেলে হাসান শাহ (২০) ও একই গ্রামের সোহেল শেখ এর ছেলে সাইফুল শেখ (১৯)। এদের বাবা-মা বাংলাদেশী হলেও জন্ন ভারতের গুজরাত প্রদেশের আমেদাবাদ জেলার যথাক্রমে নেহেরীনগর, জোপারপাচ্চি ও ফুলবাড়িয়ায়।
কোষ্টগার্ড পশ্চিম জোনের মংলা মিডিয়া সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, বিএসএফ এর পুশ ইন করা ৭৮ জনের মধ্যে ৭৫ জন বাংলাদেশী। অপর তিনজনের পৈতৃক বাড়ি বাংলাদেশে হলেও তাদের জন্ম ভারতে। সে কারণে ওই তিনজনের বিরুদ্ধে কোষ্টগার্ড বাদি হয়ে ররিবার রাতেই শ্যামনগর থানায় মামলা দায়ের করেছে। ৭৫জন বাংলাদেশীকেও একইসাথে শ্যামনগর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ৬৭ জনের বাড়ি নড়াইল জেলায়. ৬ জনের খুলনায়, দুইজনের যশোরে, একজনের বরিশালে ও একজনের সাতক্ষীরায়।
সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিথুন সরকার জানান, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ এর সাতক্ষীরার শ্যামনগরের সুন্দরবন সংলগ্ন মান্দারবাড়িয়া এলাকায় ঠেলে দেওয়া ৭৮ জন বাংলাভাষীকে রবিবার রাত ১১টার দিকে কোস্টগার্ড পশ্চিমজোন মংলা থেকে শ্যামনগর থানায় সোপর্দ করে। বাংলাদেশে পৈতৃক ভিটা হলেও তিনজনের জন্ম ভারতে।
কোষ্টগার্ড পশ্চিম জোনের মংলা জোনাল অফিসের পিও মশিউর রহমান বাদি হয়ে রবিবার রাতে ওই তিনজনের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে (১১সি ধারায়) থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
তাদেরকে সোমবার (১২ মে'২৫) দুপুরে আদালতে পাঠানো হবে। বাকী ৭৫ জনকে তাদের স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত ৮ মে সন্ধ্যায় ভারতীয় বিএসএফ ৭৮ জনকে বাংলাদেশী নাগরিক হিসেবে ভারত- বাংলাদেশ সীমান্তের বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন গভীর সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া এলাকায় একটি চরে ঠেলে দিয়ে যায়। সেখান থেকে তারা পায়ে হেঁটে বনবিভাগের মান্দারাড়িয়া টহল ফাঁড়িতে চলে আসে। সেখানে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রবিবার বিকেলে সমুদ্রপথে একটি জাহাজ ও একটি স্পীড বোর্ড এ করে বাগেরহাটের মংলা কোস্টগার্ড অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ৭৫ জন বাংলাদেশী ও তিনজন ভারতীয় বলে জানা যায়। রবিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাদেরকে সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানায় সোপর্দ করা হয়।