রোববার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন ভারতের আধিপত্যবাদের কারণে দেশের সংকটজনক পরিস্থিতি নিয়ে। বৈঠকে অংশগ্রহণকারী নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না সাংবাদিকদের কাছে প্রধান উপদেষ্টার মন্তব্য তুলে ধরেন এবং দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করেন।
বৈঠকে উপস্থিত অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা দেশবাসীর সামনে নতুন ধরনের ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “ভারতীয় আধিপত্যবাদ আমাদের দেশের চলমান পরিবর্তনকে স্বীকার করতে চায় না। তারা পারলে একদিনেই আমাদের ধ্বংস করে দিতে চায়। এজন্য তারা যেসব ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনা করছে, সেগুলো থামানো প্রয়োজন।”
মান্না জানান, প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, “এই সংকট মোকাবেলায় আমাদের পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যেকোনো রাজনৈতিক পার্থক্যের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার জন্য সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।”
বৈঠকে নাগরিক ঐক্যের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টাকে নির্বাচনে সরাসরি অংশগ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়। পাশাপাশি, দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারণ এবং নির্বাচনের রূপরেখা সম্পর্কে স্পষ্ট নির্দেশনা প্রদানের দাবিও উঠেছে। মান্না বলেন, “আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে জানিয়েছি, নির্বাচনের তারিখ, রূপরেখা এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া কী হবে, এসব বিষয়ে জনগণের কাছে সঠিক এবং স্পষ্ট বার্তা দেওয়া উচিত।”
বৈঠকের শুরুতেই প্রধান উপদেষ্টা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যালোচনা করেন এবং ভারতের সীমান্ত প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “ভারতীয় আধিপত্যবাদ শুধু সীমান্তেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এবং সামাজিক পরিবর্তনের পথে বড় ধরনের বাধা সৃষ্টি করছে।”
রাজনৈতিক নেতারা সম্মত হয়েছেন, এই সময় দেশের বৃহত্তর স্বার্থেই পারস্পরিক মতবিরোধ ভুলে গিয়ে জাতির ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। বৈঠকের শেষে একত্রিত রাজনৈতিক দলগুলো প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনায় কাজ করার অঙ্গীকার করেন এবং দেশের স্বাধীনতা রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
এসময় মান্না বলেন, “আজকের বৈঠক ছিল একটি দিক নির্দেশক। দেশের ভবিষ্যৎ স্বার্থে আমরা সকলে একসঙ্গে কাজ করব এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলব।”
রাজনৈতিক অস্থিরতা, আন্তর্জাতিক চাপ এবং ভারতের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধেও দেশের অভ্যন্তরীণ শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই বৈঠককে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে এ ধরনের আলোচনা ভবিষ্যতে আরও গভীর রাজনৈতিক সমাধানের পথ প্রশস্ত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।



















