ভারতের গর্বিত সামরিক অর্জন রাফাল যুদ্ধবিমান পাকিস্তানের হামলায় ভূপাতিত হয়েছে—এই দাবি ঘিরে দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক এবং সামরিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে আলোড়ন। এই প্রথমবারের মতো ফ্রান্সের সশস্ত্র বাহিনী এ বিষয়ে প্রকাশ্যে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ফরাসি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল গুইলাম ভার্নেট এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ফ্রান্স বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছে এবং এর সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে তথ্য চাওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, “আমরা এখনো নিশ্চিত নই, তবে বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য যাচাই করছি। ভারতের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।” যদি ঘটনা সত্যি হয়, তাহলে এটি হবে ফ্রান্স নির্মিত রাফাল যুদ্ধবিমানের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ভূপাতনের ঘটনা।
পাকিস্তানের দাবি: ভূপাতিত হয়েছে পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান!
ঘটনার সূত্রপাত হয় ৭ মে রাতে। পাকিস্তান দাবি করে, ভারতের ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর পাল্টা জবাবে তারা পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে নামিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
-
তিনটি রাফাল
-
একটি মিগ-২৯
-
একটি এসইউ-৩০
এই দাবি প্রকাশের পর থেকেই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়। যদিও ভারত সরকার এই অভিযোগের সরাসরি সত্যতা স্বীকার বা প্রত্যাখ্যান করেনি, তবুও ভারতীয় বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “ক্ষয়ক্ষতি যুদ্ধেরই অংশ।” এই মন্তব্যে পরিস্থিতি আরও ধোঁয়াশাপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
ফরাসি উদ্বেগ এবং গোয়েন্দা রিপোর্ট
ফ্রান্সের প্রতিরক্ষা মহলে রাফাল যুদ্ধবিমান বরাবরই একটি গর্বের প্রতীক। মুখপাত্র ভার্নেট বলেন, “রাফালের কার্যকারিতা ও নির্ভরযোগ্যতা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” তাই এই সম্ভাব্য ভূপাতনের বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে ফ্রান্স।
এদিকে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন তাদের প্রতিবেদনে জানায়, ফ্রান্সের একটি শীর্ষ গোয়েন্দা সূত্র দাবি করেছে, পাকিস্তান অন্তত একটি রাফাল যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে। তবে একাধিক রাফাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কি না, তা এখনও তদন্তাধীন রয়েছে।
🇮🇳 ভারতের চুপ থাকা ও কূটনৈতিক চাপ
ভারতের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট প্রতিক্রিয়া না আসলেও বিশ্লেষকদের মতে, দিল্লির নীরবতা কৌশলগত। রাফাল নিয়ে ভারতীয় রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্ব বরাবরই শক্ত বার্তা দিয়ে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে প্রতিরক্ষামন্ত্রী, রাফালকে ভারতীয় আকাশ প্রতিরক্ষার গেমচেঞ্জার হিসেবেই তুলে ধরেছেন। এখন যদি সেই রাফাল ভূপাতিত হয়ে থাকে, তবে তা ভারতের সামরিক মর্যাদার ওপর বড় ধাক্কা হতে পারে।
বিশ্লেষকরা কী বলছেন?
রাফালের সম্ভাব্য ভূপাতনকে ঘিরে বিশ্লেষকরা বলছেন, “এটি শুধু একটি প্রযুক্তিগত ব্যর্থতা নয়, বরং ভারতের প্রতিরক্ষা ভাবমূর্তির ওপর সরাসরি আঘাত।”
তাদের মতে, ভারত যদি সত্যিই এই যুদ্ধবিমানের ক্ষতির তথ্য গোপন করে থাকে, তাহলে তা ভবিষ্যতে কূটনৈতিক ও প্রতিরক্ষা চুক্তির ক্ষেত্রে বড় প্রশ্ন তৈরি করতে পারে।
সামনে আসছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য?
বর্তমানে ফ্রান্স ও ভারতের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান চলছে। খুব শিগগিরই আনুষ্ঠানিক তদন্তের ফলাফল সামনে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে এই ঘটনাই যদি সত্যি হয়, তাহলে রাফালের বিশ্বব্যাপী ভাবমূর্তি ও ভারতের প্রতিরক্ষা কৌশলে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে — একে অনেকে বলছেন, দক্ষিণ এশিয়ার আকাশে যুদ্ধবিমানের রাজনীতির নতুন মোড়।
