বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় 'ডিটওয়া'র দ্রুত অগ্রসরের কারণে ভারতের দক্ষিণ উপকূলীয় রাজ্যগুলিতে চরম সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এর প্রভাবে তামিলনাডু, অন্ধ্রপ্রদেশ ও পুদুচেরি—এই তিন অঞ্চলে জারি করা হয়েছে 'রেড অ্যালার্ট', যা স্থানীয় প্রশাসনকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বাধ্য করেছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ইতোমধ্যে এসব অঞ্চলে শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টি ও প্রবল দমকা হাওয়া, যার ফলে সাধারণ জনজীবন বিপর্যস্ত।
ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর (আইএমডি) নিশ্চিত করেছে যে ঘূর্ণিঝড়টি রোববার উত্তর তামিলনাডু, পুদুচেরি এবং সংলগ্ন দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূল অতিক্রম করবে। আবহাওয়ার এই চরম অবনতির কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থায় বড় ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। চেন্নাই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সতর্কতা ও যাত্রী সুরক্ষার অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে ৫৪টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
আইএমডি-এর মহাপরিচালক ড. মৃগুঞ্জয় মহাপাত্র সংবাদমাধ্যমকে জানান, ঘূর্ণিঝড়টি সরাসরি স্থলভাগে আঘাত হানবে না, তবে উপকূলের কাছ দিয়ে অতিক্রম করার সময় এর প্রবল প্রভাব অনুভূত হবে। বর্তমানে তামিলনাডু ও পুদুচেরির উপকূলে বাতাসের গতি ঘণ্টায় ৭০-৮০ কিলোমিটার, যা ঝোড়ো হাওয়ার সময় ৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপকূলীয় এলাকায় ঢেউয়ের উচ্চতাও বেড়ে ৮ মিটার পর্যন্ত উঠছে, যা মৎস্যজীবীদের জন্য গুরুতর বিপদ সৃষ্টি করতে পারে।
তামিলনাডুর রাজস্ব ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী এস. এস. আর. রামাচন্দ্রন জানিয়েছেন, সরকার যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুরোপুরি প্রস্তুত। যদিও চেন্নাই উপকূলে সরাসরি আঘাত হানার বিষয়টি এখনও অনিশ্চিত, তবে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে প্রস্তুতি তুঙ্গে। আইএমডি সতর্ক করে বলেছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কৃষিজমির ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে এবং অতিবৃষ্টির কারণে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা ও প্লাবনের উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হতে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে।



















