ভারত থেকে দেশ ধ্বংশের ষড়যন্ত্র করছে শেখ হাসিনা, নয়া কৌশলে মাঠে নেমেছে আ’লীগ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়ার পর দেশজুড়ে শুরু হয়েছে নয়া ষড়যন্ত্রের রাজনীতি। ভারতে পলাতক শেখ হাসিনা দেশ ধ্বংসে সক্রিয়, মাঠে নেমেছে লুকিয়ে থাকা মাস্টারমাইন্ডরা। ছাত্র আন্দোলন থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক সংকট—সবক..

আওয়ামী লীগ এখন নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল। নেতৃত্বশূন্যতা আর জনবিচ্ছিন্নতার এই সংকটে দলটি প্রকাশ্যে মাঠে না থাকলেও গোপনে নানা কৌশলে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ছাত্র আন্দোলন, শ্রমিক অসন্তোষ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি—সবকিছুতেই ইন্ধন রয়েছে ‘স্যাবোটাজ লীগে’র। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশজুড়ে যে উত্তপ্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তা কাকতালীয় নয়—বরং একটি সুপরিকল্পিত চক্রান্তেরই ফল।

গণ-অভ্যুত্থানে পদত্যাগের পর শেখ হাসিনা ভারতে পলায়ন করেন। এখন সেখান থেকে দেশকে অস্থিতিশীল করতে প্রতিনিয়ত ষড়যন্ত্র করছেন। তাঁর নির্দেশেই দেশে-বিদেশে আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগ নেতারা আন্দোলনগুলোকে ‘ক্যাশ’ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছেন। তারা ঠিক যেন এমন প্রতিজ্ঞা করেছে—নিজেরা ভালো নেই, কাউকে ভালো থাকতে দেবে না।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আন্দোলন যতই যৌক্তিক হোক না কেন, সেখানে এক ধরনের ‘গোপন ছায়া’ কাজ করছে। প্রতিটি আন্দোলনের মাঝে ঢুকে দলটির কর্মীরা তা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চাইছে। উদ্দেশ্য একটাই—বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ ও অজনপ্রিয় হিসেবে তুলে ধরা এবং নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন ব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করা।

গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা সাইফুল হকের দাবি, শেখ হাসিনা ভারতে থেকেই সরাসরি নেতৃত্ব দিচ্ছেন এসব ষড়যন্ত্রে। আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ সংগঠনগুলো এখন ছদ্মবেশে অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করছে। শিক্ষার্থী, শ্রমিক, আনসার, অটোরিকশাচালক, এমনকি চিকিৎসক ও শিক্ষক সংগঠন পর্যন্ত আন্দোলনের নামে ব্যবহার হচ্ছে।

তাঁর ভাষায়, ‘‘গণ-অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা পালিয়েছে ঠিকই, কিন্তু ভারতে বসেই প্রতিনিয়ত সরকার পতনের ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের লক্ষ্য একটাই—দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে জনগণকে বিপথে ঠেলে দেওয়া।’’


ছাত্র আন্দোলনের মধ্যেই গোপন চক্রান্ত

সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা আবাসনসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নামে। প্রথম দিনেই পুলিশের লাঠিচার্জ পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করে তোলে। তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর পানির বোতল ছুড়ে মারার ঘটনার পর থেকেই প্রশ্ন উঠেছে—এটা কি শুধুই ক্ষোভ, না কি পরিকল্পিত হামলা?

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই আন্দোলনেও গোপনে কাজ করেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত একটি দলের ছাত্র সংগঠন।

অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল নেতা সাম্যর হত্যাকাণ্ড এবং গাজীপুরে এনসিপি নেতার ওপর হামলার পেছনেও একই চক্রের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। একের পর এক এই সহিংস ঘটনায় সন্দেহ আরও ঘনীভূত হচ্ছে।


অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাতের গোপন পরিকল্পনা

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, অন্তর্বর্তী সরকারের ভুলত্রুটি থাকলেও এটি গণ-অভ্যুত্থানের ফসল। এই সরকার ব্যর্থ হলে গণজাগরণও ব্যর্থ হবে। এই সুযোগে একটি চক্র নিজেদের পুরনো ক্ষমতার ফাঁদ পেতে বসেছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ নেতারা চায়—এই সরকার কোনোভাবেই টিকতে না পারে।

গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী বলছেন, ‘‘সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন যৌক্তিক। কিন্তু শেখ হাসিনার পরাজিত আওয়ামী লীগ সুযোগ নিচ্ছে এই অনিশ্চয়তার। আন্দোলনের ভেতরে ঢুকে ছদ্মবেশে চালাচ্ছে নিজেদের এজেন্ডা।’’


ছদ্মবেশী ষড়যন্ত্রকারীদের নতুন কৌশল

বিশ্লেষণ বলছে, পুলিশের ভেতরেও রয়েছে আওয়ামী লীগ আমলের নিযুক্ত অনুগত সদস্যরা। তাঁদের ব্যবহার করেই গোপনে আন্দোলনে সহিংসতা উসকে দেওয়া হচ্ছে। পুলিশের লাঠিচার্জ বা সংঘর্ষের ঘটনা জনমনে সরকারের প্রতি ক্ষোভ বাড়াচ্ছে, যার সুযোগ নিচ্ছে ষড়যন্ত্রকারীরা।

আন্দোলনগুলোকে ছদ্মবেশে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও হোয়াটসঅ্যাপ ভিত্তিক গোপন পরিকল্পনার মাধ্যমে। নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের অফিশিয়াল পেজে পর্যন্ত মশাল মিছিল, হরতাল, লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি দেওয়া হচ্ছে। উদ্দেশ্য একটাই—অরাজকতা বাড়িয়ে জনগণকে সরকারের বিরুদ্ধে উত্তেজিত করা।


 প্রয়োজন তীক্ষ্ণ নজরদারি ও গণচেতনার জাগরণ

বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের পাশাপাশি সাধারণ জনগণকেও হতে হবে সজাগ। প্রতিটি আন্দোলনে কে নেতৃত্ব দিচ্ছে, কেন দিচ্ছে—তা যাচাই করা জরুরি। নচেত আবারও দেশে একটি ভয়াবহ ছায়া নেমে আসবে, যার জন্য প্রস্তুত হয়ে বসে আছে ‘স্যাবোটাজ লীগ’।

এখন সময়, ফাঁদ চিনে এগোনোর। গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় প্রতিটি পদক্ষেপে সাবধানতা ও সচেতনতা ছাড়া বিকল্প নেই। কারণ ষড়যন্ত্র থেমে নেই—শুধু মুখোশ বদলে নতুন ছায়ায় মাঠে নেমেছে।

Aucun commentaire trouvé