জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মাসুদ কামাল উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ওয়েস্টিনে খাওয়ার বিল কে দেয় তা নিয়ে তীক্ষ্ণ প্রশ্ন তুলেছেন। ইউটিউব ভিডিওতে তিনি নির্বাচন, জনপ্রিয়তা ও উপদেষ্টা পদ নিয়ে কড়া সমালোচনা করেন।
রাজনৈতিক অঙ্গন এবং সামাজিক মাধ্যমে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল। নিজের ইউটিউব চ্যানেল ‘কথা’–তে প্রকাশিত এক ভিডিওতে তিনি সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের কিছু ব্যক্তিগত অভ্যাস, নির্বাচন করার ঘোষণা এবং রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে সরাসরি ও তীক্ষ্ণ ভাষায় প্রশ্ন তুলেছেন।
ভিডিওতে মাসুদ কামাল বলেন, আসিফ মাহমুদ মাঝে মাঝে কাজ শেষ করতে করতে গভীর রাত পার করে ফেলেন। সেই সময় বাসায় খাবারের ব্যবস্থা না থাকায় তিনি ৩০০ ফিট এলাকার নীলা মার্কেটে গিয়ে হাঁসের মাংস খান। কিন্তু অনেক সময় ভোর হয়ে গেলে ওই মার্কেট বন্ধ হয়ে যায়। তখনই নাকি তার গন্তব্য হয় রাজধানীর পাঁচ তারকা হোটেল ওয়েস্টিন। এখানেই মূল প্রশ্ন তুলেছেন মাসুদ কামাল—“ওয়েস্টিনে গিয়ে খাওয়ার বিলটা কে দেন? আপনি কি নিজের পকেট থেকে দেন, নাকি ফ্রি খান? ক্যাশ অর কাইন্ড—কোন ফর্মুলায় ফ্রি খান? আপনাকে কে খাওয়ায়, ভাই?”
তিনি আরও বলেন, “এই হলো আমাদের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার কাণ্ডকারখানা।” সাংবাদিক মাসুদ কামালের এই মন্তব্যের পর রাজনৈতিক মহলে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
মাসুদ কামাল ভিডিওতে উল্লেখ করেন, আসিফ মাহমুদ নাকি শিগগিরই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তার দাবি অনুযায়ী, শিডিউল ঘোষণার আগে তিনি উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগ করবেন। মাসুদ কামাল বলেন, “আপনি এতদিন ধরে সব গুছিয়ে নিয়ে শিডিউলের আগের দিন পদত্যাগ করে নির্বাচন করবেন। করেন ভাই, নির্বাচন করেন। কিন্তু আপনার যে ইমেজ তৈরি হয়েছে, অভিজ্ঞতা থেকে বলছি—আপনি যদি কোনো বড় রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ না হয়ে একা নির্বাচন করেন, বিশেষ করে বিএনপির প্রতীক ছাড়া, যদি এনসিপি থেকে করেন, তাহলে দেখা যাক আপনার জনপ্রিয়তা আসলেই কতটা।”
তিনি আরও কটাক্ষ করে বলেন, “আপনার এই নীলা মার্কেটে হাঁস খাওয়া, আর ওয়েস্টিনে যাওয়া—এসব ঘটনা সাধারণ মানুষ জানলে ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে। কারণ আপনি শুধু একজন ব্যক্তি নন, আপনি সরকারের একজন উপদেষ্টা। সেই পদে থেকে আপনার উপর দেশের মানুষের আস্থা ও সম্মান রক্ষা করার দায়িত্ব আছে।”
মাসুদ কামাল স্পষ্ট করে বলেন, একজন উপদেষ্টা হিসেবে শুধু রাজনৈতিক দক্ষতা নয়, জনসম্মুখে একটি মর্যাদাপূর্ণ ভাবমূর্তি বজায় রাখা অপরিহার্য। ব্যক্তিগত পছন্দ বা জীবনযাত্রা মানুষের আলোচনার বিষয় হতে পারে, কিন্তু তা যেন জনগণের আস্থাকে ক্ষুণ্ন না করে, সেটিই বড় চ্যালেঞ্জ।
এই বক্তব্য প্রকাশের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ কেউ মাসুদ কামালের সাহসী মন্তব্যের প্রশংসা করছেন, আবার অনেকে মনে করছেন ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে এভাবে প্রশ্ন তোলা শোভন নয়। তবে নিঃসন্দেহে, এই বিতর্ক রাজনৈতিক অঙ্গন ও মিডিয়া মহলে আরও কিছুদিন আলোচনায় থাকবে।