বগুড়ার মহাস্থানগড় সাধু-সন্ন্যাসী, বাউলদের মিলনমেলায় মুখর..

আরিফুল ইসলাম বগুড়া প্রতিনিধি avatar   
আরিফুল ইসলাম বগুড়া প্রতিনিধি
****

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মহাস্থানগড়ে হাজারো সাধু-সন্ন্যাসী, বাউল ও পুণ্যার্থীর সমাগমে অনুষ্ঠিত হলো ঐতিহ্যবাহী বৈশাখী উৎসব। হযরত শাহ সুলতান বলখী (রহ.)-এর মাজার প্রাঙ্গণজুড়ে বৃহস্পতিবারের এ মেলায় উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।

 

প্রতিবছরের মতো বৈশাখ মাসের শেষ বৃহস্পতিবার আয়োজিত এ উৎসবে এবারও দেশ-বিদেশের ভক্ত-অনুসারীদের ঢল নামে। উৎসবকে ঘিরে মহাস্থানগড় এলাকায় শতাধিক স্টল বসে যায়, যেখানে মিষ্টান্ন, খেলনা ও প্রসাধন সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে। বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে রয়েছে এই অঞ্চলের প্রসিদ্ধ খাবার কটকটি।

 

স্থানীয় কটকটি ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম জানান, “এই উৎসব ঘিরে প্রচুর কটকটি বিক্রি হচ্ছে। সারা বছরের মধ্যে বৈশাখী উৎসবেই সবচেয়ে বেশি বেচাকেনা হয়।”

 

উৎসবের আধ্যাত্মিক দিকটিও কম নয়। দেশজুড়ে বিভিন্ন স্থান থেকে আগত ফকির-সন্ন্যাসীরা আগাম এক সপ্তাহ আগে থেকেই মাজার প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকেন। তারা নিজেদের আস্তানা গড়ে তুলে সেখানে মারফতি গান, জারি-সারি ও মুর্শিদি সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এ যেন এক অন্যরকম বাংলার চিত্র।

 

মহাস্থানগড় সরকার পাড়ার বাসিন্দা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, “শোনা যায়, ইংরেজদের বিরুদ্ধে ফকির বিদ্রোহ এখান থেকেই শুরু করেছিলেন মজনু শাহ। তার স্মৃতিকে ঘিরেই এই উৎসবের সূচনা।”

 

রংপুর থেকে আগত শহিদুল ফকির বলেন, “এই উৎসবে ভারত থেকেও সাধু-সন্ন্যাসীরা এসেছেন। আমরা দল বেঁধে এসেছি গুরুজিকে শ্রদ্ধা জানাতে ও সাধনায় অংশ নিতে।”

 

মেলায় আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন। শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ শাহীনুজ্জামান জানান, “মেলায় পাঁচ শতাধিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছি।”

 

শত বছরের প্রাচীন এই মেলা এখন শুধু একটি ধর্মীয় বা লোকজ উৎসব নয়, এটি এক ঐতিহ্য, যা প্রতিবারই নতুনভাবে প্রাণ পায় হাজারো মানুষের পদচারণায়।

No comments found


News Card Generator