close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

ববির বাজেট বৃদ্ধির দাবিতে ছাত্র কাউন্সিলের সমাবেশ ও স্মারকলিপি..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
গবেষণা ও শিক্ষায় বাজেট বৃদ্ধির দাবিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সমাবেশ ও স্মারকলিপি পেশ; অপ্রতুল বরাদ্দের প্রতিবাদে উঠেছে সোচ্চার কণ্ঠ।..

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাজেট বৃদ্ধি ও গবেষণায় অধিকতর বরাদ্দের দাবিতে সরব হয়েছে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল।
বুধবার, ২ জুলাই সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে অংশ নেন সংগঠনের ববি শাখার একাধিক নেতা ও শিক্ষার্থীরা।

সমাবেশে উপস্থিত ছাত্রনেতারা বলেন, বর্তমান বাজেট কাঠামো বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক অগ্রগতির পথে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা, মেডিকেল সেবা, আবাসন ও একাডেমিক মানোন্নয়নে বাজেট বরাদ্দ একেবারেই অপ্রতুল, যা শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনকে নানাভাবে বাধাগ্রস্ত করছে।

সমাবেশের শুরুতে সংগঠনের বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সংগঠক মৃত্যুঞ্জয় রায়ের সঞ্চালনায় বক্তব্য প্রদান করেন ভূমিকা সরকার, আব্দুর রহমান, শওকত ওসমান স্বাক্ষর, এডিসন এবং রিদওয়ানুল ইসলাম জারিফ প্রমুখ।

ভূমিকা সরকার বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে একটি সৃজনশীলতার কেন্দ্র। অথচ এখানকার শিক্ষাব্যবস্থায় বরাদ্দ এতটাই কম যে, প্রকৃত গবেষণার পরিবেশ তৈরি করা যায় না।
সরকার প্রতিবছর যে বাজেট দেয়, তা শুধু প্রয়োজনের তুলনায় নয়, আধুনিক উচ্চশিক্ষার মানদণ্ডের সাথেও যায় না।”

তিনি আরও বলেন, “শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। তা না হলে মানবিক ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধসম্পন্ন নাগরিক তৈরির স্বপ্ন ব্যর্থ হবে।”

আব্দুর রহমান বলেন, “বর্তমান বাজেটে হলে থাকার ভর্তুকি কিংবা শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা সেবার জন্য কোনো সংস্থান নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া হাজারো শিক্ষার্থীকে নানা সংকটের মুখে পড়তে হচ্ছে প্রতিদিন। এই অব্যবস্থার দায় কার?”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “এই বাজেট বাতিল করতে হবে। নতুন বাজেট দিতে হবে যেখানে শিক্ষার্থীদের মৌলিক চাহিদাগুলোর অন্তর্ভুক্তি থাকবে।”

শওকত ওসমান স্বাক্ষর বলেন, “এই বাজেট প্রস্তাব স্পষ্টভাবে দেখিয়ে দিয়েছে—রাষ্ট্র শিক্ষা নয়, বরং শিক্ষাকে পণ্য হিসেবে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে।
শিক্ষা খাতে বেসরকারিকরণ ও বাণিজ্যিকীকরণের ছাপ এতটাই প্রকট যে, সাধারণ শিক্ষার্থীকে স্বাভাবিক জীবন চালানোই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

সমাবেশ শেষে একটি স্মারকলিপি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (UGC)-এর কাছে পাঠানো হয়।
স্মারকলিপিতে দাবি জানানো হয়—বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গবেষণা, মেডিকেল, আবাসন, লাইব্রেরি ও আধুনিকায়নের জন্য বাজেট উল্লেখযোগ্য হারে বাড়াতে হবে।

উল্লেখ্য, গত ২৮ জুন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৬৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন করে।
এই বরাদ্দকে অপ্রতুল উল্লেখ করে ৩০ জুন গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল তাদের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক প্রেস রিলিজে প্রতিবাদ জানায় এবং বাজেট প্রত্যাখ্যান করে।
এই ধারাবাহিক প্রতিবাদের অংশ হিসেবে আজকের এই সমাবেশ ও স্মারকলিপি কর্মসূচি পালন করা হয়।

ছাত্রদের এই উদ্যোগ শুধু একটি বাজেটের বিরুদ্ধে নয়, বরং এটি উচ্চশিক্ষার ভবিষ্যৎ রক্ষার আন্দোলন।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিশ্রুতিশীল প্রতিষ্ঠানে যদি পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকে, তবে উন্নত ও গবেষণানির্ভর শিক্ষা বাস্তবায়নের স্বপ্ন কেবল কথার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে।

Inga kommentarer hittades