ঢাকা, ১৬ মে — বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিণী এবং দলের প্রভাবশালী নারী নেত্রী ডা. জুবাইদা রহমান রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত বায়তুল আমান জামে মসজিদে শুক্রবার (১৬ মে) আবারও জুমার নামাজ আদায় করেন। দীর্ঘদিন পর দেশীয় মাটিতে ফিরে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে তিনি তার ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক জীবনে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করলেন।
দুপুরে মসজিদের মহিলাদের জন্য নির্ধারিত স্থানে উপস্থিত হয়ে ডা. জুবাইদা নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বের হতে দেখা যায়, বহু উৎসুক জনতা তাকে দেখতে ও তার সঙ্গে কথা বলতে অপেক্ষা করছে। তিনি হাস্যোজ্জ্বল মুখে উপস্থিত মুসল্লিদের শুভেচ্ছা জানান, কুশল বিনিময় করেন এবং হাত উঁচিয়ে সালাম দেন।
মসজিদ প্রাঙ্গণে তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিএনপির শীর্ষস্থানীয় কিছু নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা, যার মধ্যে notable ছিলেন মিয়া নুরুদ্দিন আহাম্মেদ অপু, নিলুফার চৌধুরী মনি, মিডিয়া সেলের আতিকুর রহমান রুমন এবং জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ। এদের সবাই মিলে একটি ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক ও সামাজিক মহল তৈরি করছেন, যা দলের পুনর্গঠন ও জনসমর্থন জোগাতে এক গুরুত্বপূর্ণ সংকেত হিসেবে গণ্য হচ্ছে।
নামাজের পর ডা. জুবাইদা তাঁর বাবার বাসায় যান, যিনি সাবেক নৌবাহিনীর প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল মরহুম মাহবুব আলী খান ছিলেন। ধানমন্ডির ওই বাসায় তিনি মা ইকবাল মান্দ বানুসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটান, যা ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ঐক্যের প্রতীক।
এ দিন রাতেই গুলশানে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বাসভবন ফিরোজায় ফেরার কথা রয়েছে তাঁর। এর আগে দুপুরে সাড়ে বারোটার দিকে তিনি ফিরোজা থেকে পুলিশ স্কটসহ বের হন, যা তাঁর নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতিফলন।
এর আগে গত ৬ মে দীর্ঘ ১৭ বছর পর লন্ডন থেকে দেশে ফিরেছিলেন ডা. জুবাইদা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বেগম খালেদা জিয়া এবং প্রয়াত নেত্রী আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান। তাদের দেশে ফেরা বিএনপির জন্য এক নতুন আশা ও প্রত্যাশার সঞ্চার করেছে।
বায়তুল আমান জামে মসজিদে ডা. জুবাইদার পুনরায় নামাজ আদায়ের দৃশ্য বিএনপির পক্ষ থেকে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক বার্তা হিসেবে গৃহীত হচ্ছে, যা দলের ভক্তদের মধ্যে উৎসাহ ও উদ্দীপনা যোগাচ্ছে। বিশেষ করে, এই সময় দেশে রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং নানা বিতর্কের মাঝেও ধর্মীয় ও সামাজিক সম্প্রীতির বার্তা বহন করে এই ঘটনার গুরুত্ব দ্বিগুণ হয়েছে।
এছাড়া, ডা. জুবাইদার এই ধর্মীয় অংশগ্রহণ তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে নতুন উদ্দীপনা ও মানসিক শান্তির প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে। দীর্ঘ সময় বিদেশে থাকার পর দেশে ফিরে নিজ এলাকা ও মসজিদে সক্রিয় অংশগ্রহণে তাঁর মানসিক ও আত্মিক পুনরুজ্জীবন স্পষ্ট।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ডা. জুবাইদার মসজিদে পুনরায় নামাজ আদায় রাজনৈতিক মহলে তাঁর অবস্থান ও প্রভাবকে শক্তিশালী করবে। এটি বিএনপির ভাবমূর্তি গঠনেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে নারীদের মাঝে দলের প্রতি আস্থা বাড়াতে সাহায্য করবে।
ঢাকার বায়তুল আমান জামে মসজিদে এই পুনর্মিলনের মুহূর্তটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে গণ্য হচ্ছে, যা আগামী দিনে দেশের রাজনৈতিক ধারা ও দলীয় কৌশল পরিবর্তনে প্রভাব ফেলবে।
ডা. জুবাইদার ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ তাঁর পারিবারিক বন্ধন ও সামাজিক যোগাযোগকে আরও গভীর করেছে, যা রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে একটি সুন্দর সমন্বয়ের পরিচায়ক।
অবশ্যই, আগামী দিনে তাঁর এই সক্রিয়তা এবং রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বিএনপির জন্য একটি শক্ত ভিত্তি গড়ে তোলার সহায়ক হবে, বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের মধ্যে পারস্পরিক ঐক্য ও সামাজিক দায়িত্ববোধ সৃষ্টি করতে।
ডা. জুবাইদা রহমানের বায়তুল আমান জামে মসজিদে পুনরায় জুমার নামাজ আদায়ের ঘটনা শুধু একটি ধর্মীয় কর্মসূচি নয়, এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে নতুন প্রাণশক্তি ও এক নতুন আশা জাগানোর প্রতীক। দেশের রাজনীতির গতিপথে এ ধরনের দৃশ্য একদিকে যেমন সংহতি ও ঐক্যের বার্তা বহন করে, অন্যদিকে তা জনগণের কাছে নেতাদের মানবিক ও নৈতিক দিক তুলে ধরে।