close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফেরাতে চীন ইতিবাচক, মির্জা ফখরুল..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল জানালেন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চীন “অত্যন্ত ইতিবাচক” এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে তারা মিয়ানমারের সঙ্গে কাজ করছে। বিস্তারিত জানুন।..

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, চীন বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফেরানোর ক্ষেত্রে অত্যন্ত ইতিবাচক মনোভাব গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, সম্প্রতি পাঁচ দিনের চীন সফরের সময় বিএনপির উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল চীনের সঙ্গে ব্যাপক আলোচনা করেছে, যা বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

বিএনপির প্রতিনিধি দলটি গত কয়েকদিন আগে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে সফর সম্পন্ন করে। দলের মধ্যে ছিলেন মির্জা ফখরুলসহ স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, জহির উদ্দিন স্বপন, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল ও চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার।

বিএনপির মহাসচিব সফরের বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, “আমরা চীনের সঙ্গে এক চীন নীতির প্রতি আমাদের দৃঢ় অবস্থান জানিয়েছি এবং দেশের বিভিন্ন প্রয়োজন, বিশেষ করে তিস্তা নদী সম্পর্কিত বিষয়ে আলোচনা করেছি। চীন এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে এবং ভবিষ্যতে এসব ব্যাপারে কাজ করবে।”

তিনি আরও জানান, রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় চীন অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করেছে। মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে চীন আলোচনা করছে যাতে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, সম্মানজনক ও স্বেচ্ছাসেবক প্রত্যাবাসন নিশ্চিত হয়।

চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়টি গুরুত্ব দিই, তবে আমাদের নীতিতে আপস করব না।” তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, “তাইওয়ানের একটি ট্রেড সেন্টার কয়েকদিনের জন্য বাংলাদেশে ছিল, কিন্তু পরে সেটি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

বিএনপির মহাসচিব বলেন, “আমরা আশা করছি, কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সাংস্কৃতিক বিনিময়, প্রযুক্তি হস্তান্তর ও অন্যান্য ক্ষেত্রে চীন আরও সক্রিয় সহযোগিতা করবে।”

তিনি উল্লেখ করেন, “বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সফর বিনিময় চীনা কমিউনিস্ট পার্টির একটি প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্য। আমাদের এই সফর সেই ঐতিহ্যের অংশ।”

বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে চীনকে সহযোগিতামূলক ও বন্ধুত্বপূর্ণ দিক থেকে দেখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “চীন আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী দেশ, যা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অবদান রাখতে চায়।”

বিএনপি মহাসচিবের এই সফর এবং চীনের ইতিবাচক মনোভাব বাংলাদেশে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক ক্ষেত্রে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ও বিএনপির কূটনৈতিক পদক্ষেপ

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সমর্থন গুরুত্বপূর্ণ। বিএনপির প্রতিনিধিদলের এই সফর প্রমাণ করে চীন বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় পুনরায় অংশগ্রহণে উৎসাহী। সফরের সময় রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিভিন্ন বিষয় আলোচনার পাশাপাশি বিশেষ গুরুত্ব পায় তিস্তা নদীর জলবণ্টন ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন।

বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক শুধুমাত্র কূটনৈতিক নয়, বরং সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত বিনিময়ও জোরদার করতে চাই।” মির্জা ফখরুল উল্লেখ করেন, “আমরা ভবিষ্যতে সরকার পরিচালনার দায়িত্বে এলে এসব বিষয়ে চীনের সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “চীন এই সংকটের সমাধানে আন্তরিকভাবে কাজ করছে এবং মিয়ানমার সরকারকে চাপ দিতে তাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।”

বিএনপির এই সফর চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে একটি মাইলফলক। বিশেষত রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে চীনের সহায়তা বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে বিএনপির প্রতিনিধি দল এই সফরে অংশগ্রহণ করেছে, যা তাদের আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বিশ্বের নানা দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে চীনের এই ধরনের সফর বিনিময় ঐতিহ্যগত।

বিএনপি মহাসচিব জানান, “আমরা কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তীতে চীন থেকে আরও বেশি সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি, যাতে আমাদের সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে মিথস্ক্রিয়া বেড়ে যায়।”

বিএনপির এই সফর রাজনৈতিক দৃশ্যপটে নতুন আলো এনে দিয়েছে, যেখানে চীনকে একটি কার্যকরী ও সমঝোতামূলক অংশীদার হিসেবে দেখা হচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, “বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনঃস্থাপনে কাজ করব।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, “চীনের সঙ্গে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হয়ে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য পরিবেশ তৈরি হবে।”

চীনের সঙ্গে বাংলাদেশ ও বিএনপির সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করতে সাংস্কৃতিক বিনিময়, প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার ওপর জোর দেয়া হবে। বিএনপি আশা করে, এ ধরনের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নের পথ সুগম করবে।

No comments found