ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালের সাম্প্রতিক মন্তব্য—"ভারত বাংলাদেশে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন দেখতে চায়"—নিয়ে উত্তপ্ত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটি এই মন্তব্যকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সরাসরি হস্তক্ষেপ এবং আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক শিষ্টাচার ও জাতিসংঘ ঘোষিত সনদের লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করেছে।
শনিবার (৩১ মে) এক বিবৃতিতে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম বলেন, “বাংলাদেশ একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র। এ দেশের জাতীয় নির্বাচন কখন অনুষ্ঠিত হবে, তা নির্ধারণ করার একমাত্র অধিকার বাংলাদেশের জনগণের। ভারতের এই ধরনের মন্তব্য সম্পূর্ণভাবে অনভিপ্রেত, অগ্রহণযোগ্য এবং আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক রীতিনীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।”
তিনি আরও বলেন, “ভারতের মতো একটি বড় প্রতিবেশী রাষ্ট্রের উচিত কূটনৈতিক সৌজন্য বজায় রাখা এবং জাতিসংঘ ঘোষিত সনদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা। এই ধরনের মন্তব্য বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের জন্য অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে।”
জামায়াতের বিবৃতিতে ভারতের এ বক্তব্যের বিরুদ্ধে সরাসরি তীব্র নিন্দা জানানো হয় এবং বলা হয়, এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করার উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়েছে। দলটির মতে, এটি বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় একটি বিদেশি হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত বহন করে, যা দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ।
এছাড়া জামায়াত ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক রীতি ও নীতিমালা মেনে চলা হোক। দলটি দাবি করেছে, এই ধরনের মন্তব্য শুধুমাত্র বাংলাদেশের জনগণের আত্মমর্যাদা ও স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকারকে খাটো করে দেখে।
বিবৃতির শেষাংশে জামায়াত বাংলাদেশের বর্তমান সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই বক্তব্যের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক প্রতিবাদ জানানো হোক। তাদের মতে, এটি কেবল রাজনৈতিক সৌভ্রাতৃত্ব নয়, বরং একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে দেশের মর্যাদা রক্ষার প্রশ্ন।
উপসংহার:
জামায়াতের এই তীব্র প্রতিবাদ রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা তৈরি করেছে। ভারতের বক্তব্য এবং জামায়াতের প্রতিক্রিয়া—এই দুইয়ের টানাপোড়েনে আঞ্চলিক কূটনীতিতে উত্তেজনার ইঙ্গিত মিলছে। ভবিষ্যতে উভয় রাষ্ট্রের দিক থেকে কেমন প্রতিক্রিয়া আসে, সেটিই এখন মূল বিষয়।