close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

বাংলাদেশে ভ্যাট বৃদ্ধির প্রবণতা: কেন বারবার বাড়ানো হয় ভ্যাট?

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
২০১৭ সালে ভাইরাল হওয়া গান "দেশবাসী তোর কথা" নিশ্চয়ই মনে আছে? সেই সময়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে ব্যঙ্গ করে "ভ্যাটম্যান" বলা হয়েছিল। সেই বছরগুলিতে ভ
২০১৭ সালে ভাইরাল হওয়া গান "দেশবাসী তোর কথা" নিশ্চয়ই মনে আছে? সেই সময়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে ব্যঙ্গ করে "ভ্যাটম্যান" বলা হয়েছিল। সেই বছরগুলিতে ভ্যাট বৃদ্ধির কারণে দেশের মানুষ ক্ষুব্ধ ছিল, এবং ইতিহাস যেন প্রতি বছর নিজেকে পুনরাবৃত্তি করছে। সম্প্রতি, বাংলাদেশে নতুন এক "ভ্যাটম্যান" আবির্ভূত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বর্তমান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদের সিদ্ধান্তে ভ্যাট বাড়ানোর ঘোষণা করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে গত ৯ জানুয়ারি জারি করা একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে। এরপর থেকেই ১০০টিরও বেশি পণ্য ও সেবার উপর ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক পূর্বের তুলনায় বেড়ে গেছে। ভ্যাট বৃদ্ধি ও অর্থনীতির উপর প্রভাব অর্থনৈতিক উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ দাবি করেছেন, এই ভ্যাট বৃদ্ধির ফলে মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে না। তবে সাধারণ মানুষ এই কথায় বিশ্বাস রাখতে পারছেন না। উন্নত দেশগুলো আয়করের মাধ্যমে রাজস্ব সংগ্রহের উপর জোর দিলেও বাংলাদেশে ভ্যাট ও পরোক্ষ করের মাধ্যমে রাজস্ব সংগ্রহের প্রবণতা অনেক বেশি। ভারত যেখানে তাদের আয়ের ৫০ শতাংশের বেশি আয়করের মাধ্যমে অর্জন করে, সেখানে বাংলাদেশে ৬৫ শতাংশ আয় আসে ভ্যাট এবং পরোক্ষ করের মাধ্যমে। অথচ এসব কর সাধারণত মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের উপর বেশি প্রভাব ফেলে। কেন বারবার ভ্যাট বাড়ে? বাংলাদেশের বাজেট ঘাটতি প্রায় প্রতি বছরই দেখা যায়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য বাজেট ঘাটতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। দেশের ধনী ব্যক্তিদের কাছ থেকে সরাসরি আয়কর সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে সাধারণ মানুষের উপর ভ্যাটের বোঝা চাপিয়ে বাজেট ঘাটতি মেটানো হয়। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, একটি দেশের কর-জিডিপি অনুপাত ন্যূনতম ১৫ শতাংশ হওয়া উচিত। অথচ বাংলাদেশে এই অনুপাত মাত্র ৭.৫ শতাংশ, যা আন্তর্জাতিক মানের তুলনায় অনেক কম। উন্নত দেশের সাথে তুলনা উন্নত দেশগুলোতে আয়কর ব্যবস্থা অনেক বেশি কার্যকর। যেমন, ডেনমার্কে সর্বোচ্চ আয়কর হার ৫৫ শতাংশ, ফ্রান্স ও অস্ট্রিয়ায় এটি ৫৫ শতাংশ। তবে বাংলাদেশে আয়কর আদায়ের হার কম থাকায় ভ্যাটের মাধ্যমে রাজস্ব বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়। অর্থনৈতিক উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক দক্ষতাহীন ও শিক্ষিত বেকার জনসংখ্যা দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথে বড় বাধা। যদি এই বিপুল সংখ্যক জনশক্তিকে দক্ষ করে তোলা যায়, তাহলে দেশের অগ্রগতি অনেক দ্রুত হতে পারে। ভ্যাট বৃদ্ধির এই প্রবণতা সাধারণ মানুষের উপর চাপ বাড়িয়ে তুলছে। আয়কর সংগ্রহের ক্ষেত্রে আরও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হলে ভ্যাট নির্ভরতা কমানো সম্ভব। পাশাপাশি দেশের বাজেট ঘাটতি পূরণ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সঠিক পরিকল্পনা প্রয়োজন।
کوئی تبصرہ نہیں ملا