close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

বাড়ির পাশে পুকুর থেকে কিশোরের মর দেহ উদ্ধার, পরিবারের দাবি হ ত্যা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
রাজবাড়ীতে নিখোঁজ কিশোরের লাশ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য। পরিবারের দাবি, এটি হত্যাকাণ্ড। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে রহস্য ঘনীভূত। চলছে ময়নাতদন্ত—জবাব চাইছে এলাকাবাসী।..

রাজবাড়ীর সদর উপজেলার দাদশী ইউনিয়নের জয়রামপুর গ্রামজুড়ে এখন শুধুই শোক আর রহস্য। নিখোঁজের দুই দিন পর বাড়ির পাশের পুকুরে ১৬ বছরের কিশোর ফরহাদ হোসেনের মরদেহ ভেসে ওঠার পর এলাকা জুড়ে শুরু হয়েছে চাঞ্চল্য। পরিবার বলছে—এটি নিছক কোনো দুর্ঘটনা নয়, এটি ঠাণ্ডা মাথায় করা হত্যাকাণ্ড।

গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ফরহাদের নিথর দেহ উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর থানা পুলিশ এবং দ্রুত ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে। ফরহাদ ছিলেন মৃত মজিবর মল্লিকের একমাত্র ছেলে। ছয় বোনের পর জন্ম নেওয়া ফরহাদ পরিবারের আদরের একমাত্র সন্তান, যার মৃত্যু এখন গোটা পরিবারকে ভেঙে দিয়েছে।

পরিবার জানায়, গত সোমবার বিকেলে ফরহাদ স্থানীয় গিমটি বাজারে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর দীর্ঘসময় পেরিয়ে গেলেও সে আর ফিরে আসেনি। সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজ করে না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। এরপর ফরহাদের বড় বোন চায়না খাতুন রাজবাড়ী সদর থানায় গিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

তদন্ত শুরু করে পুলিশ, কিন্তু সন্ধান মেলেনি। অবশেষে বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে এলাকার কিছু লোক বাড়ির পাশের পুকুরে একটি লাশ ভেসে থাকতে দেখে পরিবারের সদস্যদের খবর দেয়। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় পুলিশ এবং ফরহাদের মরদেহ উদ্ধার করে।

মরদেহ দেখেই ভেঙে পড়ে ফরহাদের পরিবার। চায়না খাতুন বলেন, “আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। সে কারও কোনো ক্ষতি করত না। আমরা বিচার চাই। যারা আমার ভাইকে মেরেছে, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।”

চায়না খাতুনের এই বক্তব্যে যেন আস্থা রেখেছে পুরো এলাকাও। স্থানীয়দের অনেকেই বলছেন, ফরহাদ একজন নিরীহ ছেলে ছিলেন এবং মানসিকভাবে কিছুটা দুর্বল। কিন্তু তার এমন মৃত্যুর পিছনে অন্য কোনো রহস্য কাজ করছে কি না, সেটিই এখন প্রশ্ন।

রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, “ফরহাদ মানসিক প্রতিবন্ধী ছিল। মরদেহ উদ্ধারের পর আমরা সেটিকে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছি। আপাতত একটি অপমৃত্যু মামলা নেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।”

তবে ওসি মাহমুদুর রহমান এটাও বলেন, পরিবারের অভিযোগ আমরা গুরুত্বের সাথে দেখছি। যদি হত্যার প্রমাণ মেলে, তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এলাকাবাসী ফরহাদের মৃত্যু নিয়ে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। একইসাথে তাঁরা বলছেন, পুলিশ যেন এই ঘটনায় সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করে। অনেকের মতে, পুকুরে ভেসে থাকা দেহের কিছু চিহ্ন ও পরিস্থিতি হত্যাকাণ্ডের দিকেই ইঙ্গিত করছে।

ফরহাদের মৃত্যু রাজবাড়ী অঞ্চলে একধরনের আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পরিবার কাঁদছে, প্রতিবেশীরা স্তব্ধ। এখন সবার চোখ ময়নাতদন্ত রিপোর্টের দিকে। যদি প্রমাণিত হয়, এটি হত্যাকাণ্ড—তবে ফরহাদের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে কঠোর হাতে।

এ কিশোরের মৃত্যুর দায় কেউ এড়াতে পারবে না। পরিবার শুধু একটাই দাবি করছে—“আমার ভাইয়ের হত্যাকারী যেন পার না পায়।”

Nenhum comentário encontrado