বাড্ডায় ধৈর্যের পরীক্ষায় নগরবাসী: রাস্তায় গাড়ি কম, বিশৃঙ্খলা বেশি!
সুমন হাওলাদারঃ
ঢাকা:
রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোর মধ্যে, বাড্ডা অন্যতম। কিন্তু প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অবধি এই এলাকার প্রধান সড়কজুড়ে দেখা মেলে এক অস্বাভাবিক দৃশ্য—ভয়াবহ যানজট, যত্রতত্র রিকশা-ভ্যানের জটলা, সড়কজুড়ে পণ্য সাজিয়ে বসা হকারদের বাজার, আর পথচারীদের হাঁটার জায়গা বলতে নেই কিছুই। বাড্ডা যেন একটি চলন্ত নরক।
রাস্তা নয়, যেন হাটবাজার
বাড্ডা এলাকার একাধিক সড়ক, বিশেষ করে প্রধান সড়কটি এখন হকার ও অবৈধ যানবাহনের দখলে। ব্যস্ততম সময়গুলোতে রাস্তায় চলাচল প্রায় অচল হয়ে পড়ে। কেউ কেউ ব্যবসা করছেন ফুটপাত ছেড়ে সড়কের মাঝখানেই। এতে বাধ্য হয়ে সাধারণ মানুষকে রাস্তায় গাড়ির ফাঁক গলে হাঁটতে হয়, যা মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।
পরিবহন বিশৃঙ্খলায় জনদুর্ভোগ
বাস, ট্রাক, পিকআপ, সিএনজি, রিকশা—সব ধরনের যানবাহন একসাথে থেমে থাকছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কোনো ট্রাফিক পুলিশের দেখা নেই, থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মতো ব্যবস্থা বা কর্তৃত্ব দৃশ্যমান নয়। এই বিশৃঙ্খলায় অফিসগামী মানুষ, শিক্ষার্থী, রোগী—সবার জীবন যেন স্থবির।
স্থানীয়দের ক্ষোভ
আবদুল হাকিম, এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “আমরা সকাল-বিকেল রাস্তায় আটকে থাকি। কারো জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া মানে মানসিক চাপের নামান্তর। কবে যে মুক্তি মিলবে জানি না।”
একই অভিযোগ সুমি আক্তারের, যিনি প্রতিদিন সন্তানকে স্কুলে নিতে যান এই রাস্তা দিয়ে। “রিকশা পাই না, হাঁটার জায়গা পাই না, স্কুলে পৌঁছাতে প্রায় ঘণ্টাখানেক লেগে যায়।”
দায় এড়াচ্ছে প্রশাসন?
যানজট নিরসনে কোনো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা দৃশ্যমান নয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, মাঝে মাঝে কিছু অভিযান চালানো হয় বটে, তবে তা একদিনের মধ্যেই নিষ্প্রভ হয়ে যায়। অনেকেই মনে করছেন, হকারদের রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়া কিংবা প্রশাসনিক গাফিলতির কারণেই এই দখলদারিত্ব দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে।
সমাধান কী?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাড্ডার যানজট ও দখলদার সমস্যার সমাধানে প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ। বিকল্প রাস্তা তৈরি, ফুটপাত উন্মুক্ত রাখা, হকারদের পুনর্বাসন এবং নিয়মিত মনিটরিং ছাড়া এই পরিস্থিতির উন্নয়ন সম্ভব নয়।



















