আশুরার পর সরকারবিরোধী আন্দোলনের নির্দেশ ইমরান খানের

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
কারাগার থেকে জাতিকে নতুন বিপ্লবের আহ্বান জানালেন ইমরান খান। আশুরার পর পাকিস্তানে শুরু হতে যাচ্ছে সরকারবিরোধী আন্দোলন – ইমরানের বার্তা: "দাসত্ব নয়, স্বাধীনতা চাই!" সরকারও দিয়েছে পাল্টা হুঁশিয়..

কারাগারের অন্ধকার থেকে জাতিকে বিদ্রোহের ডাক দিলেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান। পবিত্র আশুরা পার হওয়ার পরপরই দেশজুড়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
এই বার্তা দেননি সরাসরি ইমরান খান নিজে, তবে তাঁর বার্তা বহন করে সংবাদমাধ্যমে পৌঁছে দিয়েছেন তারই আপন বোন আলিমা খান। শুক্রবার (২৭ জুন) রাওয়ালপিন্ডির সন্ত্রাসবিরোধী আদালতের সামনে সাংবাদিকদের তিনি জানান, ইমরান খান মনে করছেন—দেশে ২৭তম সংশোধনী কার্যকর করার চেয়ে বরং সরাসরি রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করাই ভালো!

আলিমার এমন বক্তব্যে পাকিস্তানি রাজনৈতিক অঙ্গন তোলপাড় হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে, সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায়—যেখানে পিটিআই দলকে সংরক্ষিত আসনে প্রতিনিধিত্ব করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেটি ইমরান খানের ক্ষোভ আরও উসকে দিয়েছে।

আলিমা বলেন, “ভাইয়ের মতে, এই রায় গণতন্ত্রের সঙ্গে নির্মম প্রহসন। এমন প্রেক্ষাপটে ইমরান খান বলেন—'দাসত্বে বাঁচার চেয়ে কারাগারে মরাও ভালো!'” তিনি আরও বলেন, ইমরান খান দলীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন, 'জাতিকে রাস্তায় নামতে হবে নিজেদের অধিকার রক্ষায়।'

ইতোমধ্যে আন্দোলনের রূপরেখা ও কৌশলগত পরিকল্পনা চূড়ান্ত বলে জানিয়েছেন আলিমা খান। তিনি উল্লেখ করেন, এটি হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও সাংবিধানিক অধিকারভিত্তিক একটি গণআন্দোলন।

সরকার অবশ্য বিষয়টি হালকাভাবে নেয়নি। সরকারের মুখপাত্র জানিয়েছেন—“পিটিআই চাইলে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করতে পারে, তবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সরকারের ভাষ্য অনুযায়ী, সংবিধানের সীমার মধ্যে থেকে প্রতিবাদ করলে সেটিকে দমন করা হবে না। তবে সহিংসতা বা রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি বরদাশত করা হবে না বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ফলে পিটিআই বড় ধরনের সাংবিধানিক ধাক্কা খেয়েছে। সংরক্ষিত আসনগুলোতে প্রতিনিধিত্ব করতে না পারায় দলটি সংসদীয় রাজনীতিতে মারাত্মকভাবে পিছিয়ে পড়বে। ইমরান খান এই পরিস্থিতিকে "গণতন্ত্র হত্যার" উদাহরণ হিসেবে দেখছেন এবং তাঁর রাজনৈতিক অস্তিত্ব রক্ষায় সর্বাত্মক জনআন্দোলনের দিকে ঝুঁকছেন।

ইতোমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় পিটিআই কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন দেখা যাচ্ছে। হ্যাশট্যাগ #AzadiMarch2.0 এবং #ImranKhanRevolution ব্যবহার করে আন্দোলনের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।

ইমরান খান তাঁর দলের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন, “এটি কেবল একটি আন্দোলন নয়, বরং একটি অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই।” তিনি বলেছেন, জনগণকে ‘নতুন পাকিস্তান’-এর স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন তিনি। এখন সেই স্বপ্ন বাঁচাতে হলে নিজেদের ভবিষ্যৎ রক্ষায় সবাইকে রাস্তায় নামতেই হবে।

ইমরান খানের নতুন বিপ্লবী ঘোষণা পাকিস্তানে রাজনীতির উত্তাপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। আশুরার পর কী ঘটতে যাচ্ছে পাকিস্তানের রাজপথে—সেদিকেই তাকিয়ে এখন পুরো দেশ ও আন্তর্জাতিক মহল।

Tidak ada komentar yang ditemukan