আশিক চৌধুরী: বাংলাদেশের বিনিয়োগের ‘সুপারস্টার’

আব্দুল্লাহ আল মামুন avatar   
আব্দুল্লাহ আল মামুন
লেখক: আব্দুল্লাহ আল মামুন
আশিক চৌধুরী বাংলাদেশের বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (BIDA) ও বাংলাদেশ ইকোনমিক জোনেস অথরিটি (BEZA)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান, যিনি ২০২৪ সালে নিয়োগ পান এবং “১০০ বিলিয়ন ডলার বিনি..

নতুন প্রজন্মের অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে উদ্ভাসিত হয়েছেন বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (BIDA) ও বাংলাদেশ ইকোনমিক জোনেস অথরিটির (BEZA) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী। অনেকে তাঁকে প্রফেসর ইউনূসের থেকেও বড় “খেলোয়াড়” আখ্যায়িত করেন—কারণ তাঁর পরিকল্পনা ও উদ্যোগ সত্যিই আকর্ষণীয় ও সাহসী।


বহুমুখী জীবন ও শিক্ষাজীবন

চাঁদপুরে জন্ম, যশোরে বেড়ে ওঠা আশিক চৌধুরী পড়াশোনা করেছেন সিলেট ক্যাডেট কলেজে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্কুল (IBA) থেকে স্নাতক এবং লন্ডন বিজনেস স্কুল থেকে ফাইন্যান্সে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। ২০১২ সাল থেকে পেশাদার স্কাইডাইভার হিসেবেও পরিচিতি পেয়েছেন—এছাড়াও আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ক্যারিয়ার গড়েছেন।


বিনিয়োগে ‘মাস্টার প্ল্যান’

আশিক চৌধুরীর মূল লক্ষ্য: “১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ এনে দেশে ১ লাখ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি”। এ লক্ষ্যে তিনি ইতোমধ্যে একাধিক বড় চুক্তি ও প্রকল্পের খসড়া তৈরি করেছেন:

  • স্টারলিং ফার্ম ও নাসা চুক্তি: বাংলাদেশকে বিশ্বের ৫৪তম দেশ হিসেবে নাসার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ করেছেন, যা আগামী ২০–২৫ বছরে সুফল দেবে।
  • ব্যাংকের ১০০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ: বিদেশি এক ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করে এই বছরে বাংলাদেশে ১০০ কোটি ডলারের প্রবাহ নিশ্চিতের রূপরেখা পেশ করেছেন।
  • মালবাহী জাহাজ ও নদী ব্যবস্থাপনা: পাঁচটি বিশাল মালবাহী জাহাজ ক্রয় এবং নদী ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা প্রণয়ন—যা দেশের লজিস্টিক দক্ষতা বাড়াবে।
  • হাসপাতাল নির্মাণ: চারটি আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ, যা স্বাস্থ্যসেবায় বৈশ্বিক মান নিয়ে আসবে।
  • ঢাকা–চট্টগ্রাম বুলেট ট্রেন: দ্রুতগতির ট্রেন চালুর জন্য বিদেশি বিনিয়োগ আনার প্রস্তুতি, যা যাত্রীবাহী রুটকে যুগান্তকারী রূপ দেবে।
  • ১০টি ইকোনমিক জোন: মিরসরাই, কোরগাঁওসহ দশটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়ন, যা শিল্প ও বিনিয়োগের কেন্দ্র হবে।

এই সব পরিকল্পনা মাত্র কয়েক মাসে আরোহিত হয়েছে—যদি এক বছরের পূর্ণ সময় পান, তাহলে দেশের বিনিয়োগের পরিপ্রেক্ষিত বদলে যেতে খুব সময় লাগবে না।


আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ শিবির ও সাফল্য

  • Investment Summit 2025: “বাংলাদেশকে ২০৩৫ সালের মধ্যে বিনিয়োগবান্ধব অর্থনীতিতে পরিণত করা হবে”—এই ঘোষণাই করে দিয়েছেন আশিক চৌধুরী।
  • Global CEOs আগমন: Samsung, Inditex, DP World, Telenor Asia-এর শীর্ষস্থানীয় নেতারা সরাসরি বিনিয়োগ দেখার জন্য আগমন করেছেন।
  • FDI Heatmap ও OSS পোর্টাল: বিনিয়োগকারীদের জন্য ১৯টি সেক্টরে টার্গেটেড তথ্য ও এক-স্টপ সার্ভিস চালু, যা বিনিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করেছে।

রাষ্ট্রদূত মানের মর্যাদা

৭ এপ্রিল ২০২৫-এ আশিক চৌধুরীকে স্টেট মন্ত্রী মর্যাদা দেওয়া হয়েছে, যা তাঁর ক্ষমতা ও দায়িত্বকে আরও সম্প্রসারিত করেছে।


সমালোচনা ও সম্ভাবনা

কিছু বিশ্লেষক প্রশ্ন তোলেন—এতো দ্রুত পরিবর্তন বাস্তবায়ন কতটা সম্ভব? তবে আশিকের নিজস্ব অভিজ্ঞতা, আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক এবং সরকারি-বেসরকারি খাতে দখল এই সম্ভাবনাকে শক্তিশালী করে তোলে।


 আশিক চৌধুরী-র নামটি ইউনুস-এর পাশাপাশি উচ্চারণ করতে ভুলবে না—কারণ তাঁর ‘মাস্টার প্ল্যান’ বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ পরবর্তী তিন বছরে সিঙ্গাপুর-মালয়েশিয়ার দিকেই ধাবিত হতে পারে।

“এই ছেলেরা ওয়েস্টার্ন আরাম ছেড়ে এসেছে দেশ বদলাতে, টাকা কামাতে নয়। তাদের একটা সুযোগ ও সাপোর্ট দিন”—বিশ্লেষকদের এই আহ্বান বাংলাদেশের নতুন বিনিয়োগ অধ্যায়ের সূচনা ঘটাতে পারে।

Không có bình luận nào được tìm thấy


News Card Generator