close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার ওপর কড়াকড়ি আরোপ করল ই রা ন..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইরানের পার্লামেন্ট আইএইএ’র সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করেছে; পরিদর্শকরা শুধুমাত্র নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদনে প্রবেশ করবেন। পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পর ক্ষয়ক্ষতির পুনরুদ্ধারে জরুরি পদক্ষেপ নিচ্ছে দেশটি।..

ইরানের পার্লামেন্ট আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করার জন্য একটি বিল পাস করেছে। নূরনিউজের বরাতে আলজাজিরা বুধবার (২৫ জুন) এ তথ্য জানিয়েছে। এই বিল পাসের মাধ্যমে ইরান আইএইএ-এর সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদানে অতীতের তুলনায় অনেক বেশি কড়াকড়ি আরোপ করেছে।

আইএইএ-এর পরিদর্শকরা আর ইচ্ছামত ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে প্রবেশ করতে পারবে না। তারা কেবলমাত্র জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের স্পষ্ট অনুমোদনের পরই এবং সংস্থাটি নিশ্চিত করবে যে, দেশের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো নিরাপদ, তখনই ইরানে প্রবেশের অনুমতি পাবে। এর ফলে আইএইএ-এর কার্যক্রমে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে।

নূরনিউজ এক সংসদ সদস্যের বরাতে জানিয়েছে, “আইএইএ আগের মতো আমাদের পারমাণবিক কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করতে পারবে না। তাদের প্রবেশ ও কর্মকাণ্ডে এখন থেকে অনেক বেশি শর্ত আরোপ করা হয়েছে।”

ইরানের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। পারমাণবিক সংক্রান্ত নিরাপত্তার দিক থেকে দেশটির এই কঠোর অবস্থান অনেকেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

সাম্প্রতিককালে ইরানের প্রধান পারমাণবিক সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ ইসলামি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের ধারাবাহিক হামলার ফলে ইরানের প্রধান পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। হামলার পর ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়ন করা হচ্ছে এবং দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনাগুলো পুনরুদ্ধারের জন্য জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

মোহাম্মদ ইসলামি বলেন, “আমাদের পরিকল্পনা হচ্ছে উৎপাদন ও সেবার প্রক্রিয়ায় কোনো বাধা না আসুক এবং পারমাণবিক শিল্পের স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকুক। আমরা জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।”

২২ জুন, ইরানের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই এ হামলার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, ফোরদো, নাতানজ এবং ইসফাহান নামের তিনটি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে।

এই হামলা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর একটি বড় ধাক্কা হিসেবে ধরা হচ্ছে। ইরান এই হামলার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে এবং দেশটির নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

ইরানের এই নতুন কৌশল আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার কার্যক্রমের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। সংস্থাটির জন্য ইরানে নিয়মিত ও সরল পর্যবেক্ষণ কঠিন হয়ে পড়বে। এছাড়া, জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোর সঙ্গে ইরানের সম্পর্কের অবনতি ঘটতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরানের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক পারমাণবিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতার জন্য জটিলতা তৈরি করতে পারে। ইরানের পক্ষ থেকে নেওয়া এই কঠোর পদক্ষেপ দেশটির সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য একটি দৃঢ় সংকেত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

ইরানের পার্লামেন্টের নতুন বিল পাস এবং পরমাণু স্থাপনায় হামলার প্রেক্ষিতে ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনাগুলো দ্রুত পুনরুদ্ধারের জন্য নেওয়া উদ্যোগসমূহ ইরানের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা কৌশলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করে ইরান নিজ দেশের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আরও নিয়ন্ত্রণ এবং সতর্কতা অবলম্বন করছে।

এই পরিস্থিতি মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা ও বিশ্বশান্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ এক মোড় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আগামী দিনে ইরান ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে পারমাণবিক সহযোগিতা ও নিরীক্ষার ক্ষেত্র কী রকম পরিবর্তন আসবে, সেটাই এখন নজরদারির বিষয়।

Nema komentara


News Card Generator