ইরানের পার্লামেন্ট আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করার একটি বিল পাস করেছে। এতে আইএইএ-এর ওপর কড়াকড়ি আরোপের মাধ্যমে পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে নিরাপত্তা আরও কঠোর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ইরানের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থার সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান এখন থেকে আরও সঙ্কীর্ণ ও নিয়ন্ত্রিত হবে। এই নতুন আইন অনুযায়ী, আইএইএ-এর পরিদর্শকরা কেবল জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের স্পষ্ট অনুমোদন পেলে এবং পারমাণবিক স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করলে ইরানে প্রবেশ করতে পারবেন।
নূরনিউজ জানিয়েছে, সংস্থাটি আগের মতো ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করতে পারবে না। নতুন কড়াকড়ির কারণে তাদের প্রবেশাধিকার ব্যাপকভাবে সীমিত হবে।
এদিকে, ইরানের পারমাণবিক সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ ইসলামি যুদ্ধবিরতির পর এক নতুন বিবৃতিতে বলেছেন, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের ধারাবাহিক হামলার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত প্রধান পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর পুনরুদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তিনি জানিয়েছেন, উৎপাদন ও সেবার কার্যক্রমে কোনো বাধা না আসে সে ব্যাপারে পূর্ণ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনাগুলো দ্রুত পুনরুদ্ধারের জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে এবং জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সব ধরনের প্রস্তুতি চলছে।
বিশেষ করে, গত ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণু স্থাপনায় হামলা চালায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই এই হামলার কথা স্বীকার করে বলেন, হামলা চালানো হয়েছে ফোরদো, নাতানজ এবং ইসফাহান স্থাপনাগুলোতে।
এই হামলার প্রেক্ষিতে ইরান আরও কঠোর হয়ে উঠেছে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচির নিরাপত্তা বাড়াতে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক পারমাণবিক নিরীক্ষণ ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে এবং ভবিষ্যতে বিশ্ব নিরাপত্তা পরিস্থিতিতেও প্রভাব ফেলবে।
ইরানের পার্লামেন্টের এই পদক্ষেপ ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিরাপত্তা বাড়ানোর পাশাপাশি ইরান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি আন্তর্জাতিক চাপ থেকে স্বাধীনভাবে পরিচালিত হবে।