close
ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!
আয়নাঘর নিয়ে তসলিমা নাসরিনের চাঞ্চল্যকর অভিজ্ঞতা: "এটি কেবল জেলখানা নয়, মানসিক নির্যাতনের এক ভয়াবহ মা


সম্প্রতি আয়নাঘর নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। সাবেক স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সময় বিরোধীদের গোপনে ধরে এনে একটি ছোট্ট ঘরে আটকে রেখে চালানো হতো নৃশংস নির্যাতন, যা ছিল মধ্যযুগীয়। গত বুধবার, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আয়নাঘর পরিদর্শন করে এটিকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের চরম উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, এই ধরনের নৃশংসতা পুনরাবৃত্তি রোধ করতে। পরিদর্শন শেষে ছবিগুলো প্রকাশ পেলে তা নিয়ে দেশব্যাপী তুমুল আলোচনা শুরু হয়।
এদিকে, আয়নাঘরের ভয়াবহতা নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন লেখক তসলিমা নাসরিন। তিনি ১৩ ফেব্রুয়ারি দিবাগত মধ্যরাতে ফেসবুকে একটি পোস্ট শেয়ার করেন, যেখানে তিনি তার নিজের অভিজ্ঞতা এবং আয়নাঘর সম্পর্কে তার দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন। তসলিমা নাসরিন লেখেন, “অনেকে আয়নাঘর দেখে হাসছেন, বলছেন আয়নাঘর এমন হতেই পারে না, আয়নাঘরে শাওয়ার থাকবে কেন, হাই কমোড থাকবে কেন, ঘুলঘুলি থাকবে কেন। কিন্তু আমার সন্দেহ নেই, এটি হতে পারে। আয়নাঘর ঠিক জেলখানার আদলে বানানো উচিত, এমন কোনও নিয়ম নেই। আয়নাঘরের কোনো নির্দিষ্ট আকার আকৃতি থাকে না, এটি একটি ফাইভস্টার হোটেলের রুমও হতে পারে।”
এছাড়া, তিনি উল্লেখ করেন, আয়নাঘর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিদ্যমান, এবং তারও একটি “নিরাপদ ঘর” নামে পরিচিত আয়নাঘরে কয়েক মাস থাকার অভিজ্ঞতা হয়েছে। সেখানে সব সময় শারীরিক নির্যাতন যেমন লাঠি বা চাবুক দিয়ে পেটানো হয় না, কিংবা বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয় না, এবং নাৎসিদের মতো গ্যাস চেম্বারে ঢোকানোও হয় না। তবে, তসলিমা নাসরিন বলেন, আয়নাঘরে বসবাসের সময় সবচেয়ে বড় নির্যাতন হলো মানসিক নিপীড়ন।
তাঁর মতে, “আয়নাঘরে বাস করলে তুমি তোমার জীবন নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। তুমি কী খাবে, কখন খাবে, কোথায় হাঁটবে, কতটুকু হাঁটবে, কার সঙ্গে কথা বলবে, কী বলবে, কখন ঘুমোবে, কী পড়বে, কী ভাববে, কী দেখবে, এসব কিছু নিয়ন্ত্রণ করবে অন্যরা। মূলত, এটি একটি মানসিক নির্যাতনের জায়গা, যেখানে আপনাকে আপনার স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করা হয়।”
এভাবে, আয়নাঘরের ভেতরে থাকা মানসিক নির্যাতন সম্পর্কে তসলিমা নাসরিনের অভিজ্ঞতা নতুন আলো ফেলেছে। এটি সমাজে একটি নতুন আলোচনা ও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, যা ভবিষ্যতে মানবাধিকার এবং স্বাধীনতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
Geen reacties gevonden