আমাদের ছোট্ট গায়েঁর দুর্যোগ
দুর্যোগ এটা পৃথিবী জুড়েই চলছে। যেমন দরুন মহামারী, বিভিন্ন প্রকারের ভাইরাস, অগ্নিকাণ্ডের, ঝড় তুফান, বন্যা ইত্যাদি অনেক প্রজাতির। এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ হওয়াতে শহরের যেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়, তারচেয়ে বেশি ক্ষয় ক্ষতি হয় গ্রাম অঞ্চলে, যা বলা বাহুল্য। কিছুটা প্রবাদ বাক্যের মত,, না মারতেই তাকে, চোখে নোনা জলে ভরা।
তেমনই আমাদের গ্রাম কিছু ক্ষয়ক্ষতিতেই দুর্যোগের সমস্যায় ঘেরাও হয়ে পড়ে।
আজ তেমন এই একটি বাস্তব চিত্রতুলে ধরেছি আপনাদের মাঝে।
সেই বাল্যকালে কত খেলেছি আমাদের এই ছোট্ট নদীর তীরে। যা নারায়ণগঞ্জ, আড়াইহাজ, কালা পাহাড়িয়া মধ্যার চরে ঘেসে যাওয়া মেঘনা নদী। এখন শুধু বইয়ের পাতা নয় মানুষের মুখে মুখে ও ফটো উঠেছে মেঘনা নদীর কথা। হ্যাঁ , এই মেঘনা নদীকেই বলেছি, আমাদের ছোট্টনদীর তীর। যা আমি স্বচক্ষে দেখেছি। বাহু খেলেছি বন্ধু-বান্ধব মিলে তার কূলে।খেলা শেষে একের পর এক ঝাঁপড়িয়ে পড়েছি তার অভ্যন্তরে।
তবে হায় ! আক্ষেপের বিষয় হলো এখন তাকে ছোট বলা যাবে না। এখন সে বহু বড় হয়ে গেছে। এক মহাসাগরের পরিণত হয়েছে। একটা সময় আমাদের বাড়ি থেকে বহু দূরে ছিল নদীর স্থান। কিন্তু এখন অতি কাছে চলে এসেছে। আরো খুব কাছে। তখন কালে বহু হাঁটার পর তার কূলে এসে দাড়াতাম। কিন্তু এখন দু চার পা হাঁটার পর যেন তীরে চলে আসি।এ কি অদ্ভুত!
সেই বাল্যকালে বন্ধুদের সাথে প্রতিযোগিতা করে এপার থেকে ওপারে সাঁতরে চলে যেতাম। কিন্তু এখন সে বহু বড় হয়ে গেছে, এখন তাকে স্পর্শ করবো তো দূরের কথা, চোখেও ছুঁয়া যায়না। কিভাবেই বা ছুবে থাকে, সে যে বহু বড় হয়ে গেছে। বড় হওয়ার দুটি কারণ।
১।ঝড় তুফানের কারণে। ঝড়ের তালে নদীর পানির উৎসব বয়ে ক্ষয়ক্ষতি হার বাড়ে।যেমন ধরুন যখনই প্রচন্ড ঝড় তুফান হয় তখন নদীর উপচে পড়া তরঙ্গের লহারিদের ধাক্কায় ধাক্কায় কিনারা ভেঙ্গে যায়। আর কিনারা ভেঙ্গে গিয়ে নদী বড় হয়ে যায়।
তবে এটা বছরে কয়েকবার হয় তা মেনে নেওয়া ও যায়।
২।কিন্তু ডাকাতদলেরা তো প্রতিদিনই এমন করে এটাতো আর মেনে নেওয়া যায় না। গ্রামের মেম্বার চেয়ারম্যানরা তো বোর্ড বসিয়ে বালু উঠিয়ে বিক্রি করে ফেলে যার ফলে নদীর মাঝে একটা ক্ষত হয়ে যায়। তারপরে নদীর কিনারা ভাঙতে থাকে। তবে মনটাকে সান্ত্বনা দিতে পারতাম যদি ডাকাতের দলেরা নদীর কিনারাটাকে বিড়ি দিয়ে দিতো বা
অন্য কোন পন্থা বের করেতো?
অথবা গ্রাম ভেঙ্গে যাওয়া থেকে কোন এক পন্থায় ব্যবস্থা করতো তারা তাহলেও মনটাকে সান্তনা দিতে পারতাম। এবং এপর থেকে ওপারে যাতায়াতের জন্য একটি সড়ক করে দিত কতই না ভালো হতো???
কিন্তু তারা এমনটি করেনি গ্রামকে ধ্বংস করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করছে।
নদী বড় হওয়ার ক্ষতি। গ্রামটা যেন আজ অর্ধেকটাই ভেঙ্গে গেছে। চুরমার হয়ে গেছে আমার সেই ছোট্ট গ্রামটি যাতে রয়েছে হাজারো মানুষের স্মৃতি।
সেই দিন ও এক মহা দুর্ঘটনা ঘটেছে। ঝিরিঝিরি কিছুটা বৃষ্টিরা দিন সাথে হো হো ধ্বনিতে বাতাস বয়ছে।একটি নৌকা কয়েকজন এসএসসি পরীক্ষার্থী আর কয়েকজন সাধারণ পাবলিক কে নিয়ে নৌকা ছুটে চলল ওই পাড়ে যাবে বলে। সেই ছোট্ট নৌকাটি মাঝ নদীতে একটি জাহাজের সাথে সংঘর্ষ হয়। সঙ্গে সঙ্গে নৌকাটি উল্টিয়ে পানির অথৈ তলে চলে যায়। শেষ নিঃশ্বাস টা নিয়ে ফিরে আসে তারা। কয়েকজন বলে ভেবেছিলাম আজ বাচঁবো না, আল্লাহ দ্বিতীয়বারের মতো জান দিয়েছে। শুধু এটা নতুন কোন কাহিনী নয়। এমন ঘটনা আমাদের গ্রামে প্রায় সময় হয়ে থাকে। তাই এগ্রামের আকুতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কাছে, তিনি যেন আমাদের এই ছোট্ট নদীর এলাকাটা কে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচার ব্যবস্থা করেন
লেখা,, মাকবুল হুসাইন
আড়াই হাজার, মধ্যারচর