close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

আল-আকসার ভাগাভাগি শুরু? একদিনে ১৮০ ইহুদি উপাসকের প্রবেশে মুসলিম বিশ্বে তোলপাড়..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইসরায়েলের অনুমতিতে রেকর্ডসংখ্যক ১৮০ ইহুদি উপাসক একসঙ্গে ঢুকলেন আল-আকসা মসজিদ চত্বরে। মুসলিমদের প্রবেশ ঠেকিয়ে দেওয়া হলো। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এটি হেবরনের ইব্রাহিমি মসজিদের মতো বিভাজনের পূর্ব..

আল-আকসা মসজিদ চত্বর কি এবার চূড়ান্ত বিভাজনের পথে? ইসরায়েল বুধবার নতুন ইতিহাস গড়েছে একদিনে রেকর্ডসংখ্যক ১৮০ জন ইহুদি উপাসককে এই মুসলিম পবিত্র স্থানটিতে প্রবেশের অনুমতি দিয়ে। আল-আকসার দীর্ঘ ইতিহাসে একসঙ্গে এত বেশি সংখ্যক ইহুদির প্রবেশ নজিরবিহীন, যা ঘিরে তীব্র উদ্বেগ ও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে মুসলিম বিশ্বজুড়ে।

বুধবার, পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ চত্বরে এই বিশাল সংখ্যক ইহুদি উপাসক প্রবেশ করেন ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর কড়া পাহারায়। সাধারণত ২০ থেকে ৩০ জন ইহুদি পর্যটক বা উপাসক একসঙ্গে প্রবেশের সীমাবদ্ধতা থাকলেও এবার সেই নিয়ম ভেঙে দেওয়া হয়। শুধু প্রবেশই নয়, তারা সেখানে প্রার্থনাও করেন, যা ধর্মীয় সংবেদনশীলতার চরম লঙ্ঘন বলে মনে করছেন মুসলিম নেতারা।

ইসলামিক ওয়াকফের আন্তর্জাতিক বিভাগের পরিচালক আওনি বাজবাজ এই ঘটনাকে 'ভীতিকর ও নজিরবিহীন' বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা এমন এক বাস্তবতার মুখোমুখি হচ্ছি, যা আগে কখনো দেখিনি। এভাবে প্রবেশের অনুমতি দিয়ে ইসরায়েল সুপরিকল্পিতভাবে আল-আকসার স্থিতাবস্থা বদলাতে চাচ্ছে।”

প্রসঙ্গত, ওয়াকফ কর্তৃপক্ষ হচ্ছে জর্ডানের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যারা ঐতিহাসিকভাবে আল-আকসার ধর্মীয় প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করে আসছে। এই সংস্থা আশঙ্কা করছে, ইসরায়েল ধীরে ধীরে মসজিদটির ধর্মীয় চরিত্র পরিবর্তনের চেষ্টা চালাচ্ছে।

ঘটনার দিন মুসলিম উপাসকদের চত্বরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে। এটি আন্তর্জাতিক আইন এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনের শামিল বলে মন্তব্য করেছেন বেশ কয়েকজন ইসলামি চিন্তাবিদ ও অধিকারকর্মী।

ইসরায়েলি পুলিশ অবশ্য দাবি করেছে, "সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় টেম্পল মাউন্টে (আল-আকসা চত্বর) প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।" তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি কেবল নিরাপত্তার প্রশ্ন নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি কৌশলের অংশ, যার মাধ্যমে ভবিষ্যতে আল-আকসাকে বিভক্ত স্থান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার পথে ইসরায়েল এগিয়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে মধ্যপ্রাচ্য পর্যবেক্ষকদের বড় একটি অংশ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, আল-আকসার ভবিষ্যৎ হয়তো হেবরনের ইব্রাহিমি মসজিদের মতোই হতে চলেছে। যেখানে মুসলিম ও ইহুদি উপাসনার জন্য স্থানটি ভাগ করে দেওয়া হয়েছে—একই স্থানে দুই ধর্মের উপাসনার ব্যবস্থা চালু থাকলেও, বাস্তবে মুসলিমদের সুযোগ-সুবিধা ও প্রবেশাধিকার সীমিত।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোও বলছে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের এ ধরনের পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘের প্রস্তাবনাগুলোর পরিপন্থী। আল-আকসা মসজিদ শুধুই একটি ধর্মীয় স্থান নয়, এটি মুসলিম বিশ্বে আত্মপরিচয়ের প্রতীক, যেখানে অনুপ্রবেশ বা ধর্মীয় অনধিকার চর্চা চরম উত্তেজনার জন্ম দিতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে মুসলিম বিশ্বের নীরবতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। কিছু আরব দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করায় ব্যস্ত, সেখানে এমন আক্রমণাত্মক ধর্মীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তারা কার্যত নিশ্চুপ।

এই ঘটনার পরপরই ফিলিস্তিনের ধর্মীয় নেতারা বিক্ষোভ ও বিবৃতি দিয়েছেন। তারা বিশ্ব মুসলিম নেতাদের আহ্বান জানিয়েছেন, “আল-আকসার স্থিতাবস্থা ও মর্যাদা রক্ষা করাই এখন আমাদের ইমানি দায়িত্ব।

Tidak ada komentar yang ditemukan