close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

আজকের দিনটি হতাশার : নাহিদ ইসলাম

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
রাজনৈতিক সংস্কারে জাতীয় ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারায় হতাশ নাহিদ ইসলাম। এনসিসি গঠন না হলে, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো আগের মতোই দলীয় নিয়ন্ত্রণে চলবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।..

জাতীয় ঐকমত্যে অগ্রগতি নেই, হতাশ নাহিদ ইসলাম: ‘গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় বাড়ছে

রাজনৈতিক সংস্কার এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে অনুষ্ঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

বুধবার, ১৮ জুন, রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের তৃতীয় দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, "আজকের দিনটি আমাদের জন্য হতাশার। আমরা আশা করেছিলাম অন্তত জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের বিষয়ে নীতিগত একটি ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারবো। কিন্তু দুঃখজনকভাবে তেমন কিছুই হয়নি।

আলোচনার প্রধান এজেন্ডাগুলোর মধ্যে ছিল রাষ্ট্রপতি নির্বাচন এবং তাঁর ক্ষমতা বাড়ানোর প্রস্তাব। নাহিদ ইসলাম জানান, এ বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ আলোচনা না হওয়ায় বিষয়টি আগামীকাল আবার তোলা হবে। তিনি বলেন, "অনেকেই রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন। কিন্তু সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি।

নাহিদ ইসলাম ক্ষোভের সঙ্গে উল্লেখ করেন, "আমরা আজ প্রশ্ন তুলেছিলাম যে অতীতে কীভাবে দুর্নীতি দমন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন, নির্বাচন কমিশনসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো দলীয়করণ ও নির্বাহী বিভাগের অনুগত প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছিল।"

তিনি বলেন, “আমরা সংস্কারের একটি পথ দেখিয়েছিলাম—একটি নিরপেক্ষ অল-পার্টি কাউন্সিল বা জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠন করা হোক। যেখানে আস্থা ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে নিয়োগ হবে। কিন্তু কিছু রাজনৈতিক দল আজ নিজেদের পূর্বেকার অবস্থান থেকে সরে গেছে। কেন এই হঠাৎ পরিবর্তন—তা তারা ব্যাখ্যাও করেনি।

আলোচনার এক পর্যায়ে নাহিদ ইসলাম অতীতের উদাহরণ টেনে বলেন, “শেখ হাসিনার শাসনামলে বিরোধী দলগুলো বারবার এইসব আইন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল, সংস্কারের দাবিও তুলেছিল। তারা বলেছিল, ক্ষমতায় গেলে এই আইনের সংস্কার করবে। অথচ আজকে তারা কোনো বিকল্প প্রস্তাবও দিল না। এটা গভীর হতাশার।

তিনি মনে করেন, এই দ্বিচারিতাই প্রমাণ করে যে বহু রাজনৈতিক দল কেবল ক্ষমতার আলোকে নিজেদের মত বদলায়—গণতন্ত্র বা রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে তাদের তেমন ভাবনা নেই।

আলোচনার শেষ দিকে নাহিদ ইসলাম উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “যদি এনসিসি গঠন না হয়, তবে আমরা যে পুরনো ব্যবস্থায় ফিরে যাব, সেটা খুবই বাস্তব শঙ্কা। আগের মতো নিয়োগ হলে আবারও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো দলীয় হুকুমের যন্ত্রে পরিণত হবে। গণতান্ত্রিক ভারসাম্য একেবারেই হারিয়ে যাবে।

শেষে তিনি বলেন, “আজকের আলোচনা থেকে আমাদের শিক্ষা হলো—শুধু কমিশন বানিয়ে কিছু হবে না। প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং জাতির বৃহত্তর স্বার্থে আত্মত্যাগ। নইলে এই আলোচনা একসময় প্রহসনে পরিণত হবে।

নাহিদ ইসলামের বক্তব্যে স্পষ্ট, বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও পারস্পরিক সন্দেহ-সংশয়ের কারণে একটি ঐক্যবদ্ধ, গণতান্ত্রিক ভিত্তি গড়ে তোলার স্বপ্ন আজও অনেক দূরে। অথচ সময় ক্ষণিক, এবং প্রত্যাশা—অসম্ভব কিছু নয়, যদি রাজনৈতিক দলগুলো সত্যিই জাতির স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়।

コメントがありません


News Card Generator