ইংল্যান্ডের মাটিতে অধিনায়কত্বের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার পর যেন নিজেকে নতুন করে চিনিয়েছেন গিল। টেস্ট নেতৃত্বের প্রথম দুই ম্যাচেই শতকের দেখা পেয়ে তিনি ঢুকে পড়েছেন ভারতের রেকর্ডবুকে।
বার্মিংহ্যামের এজবাস্টনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চলমান দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন শেষে ভারতের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৩১০ রান। দিন শেষে অপরাজিত আছেন শুভমান গিল (১১৪) ও রবীন্দ্র জাদেজা (৪১)। এই জুটির সংগ্রহ এখন পর্যন্ত ৯৯ রান।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ভারতীয় দলের শুরুটা অবশ্য স্বস্তির ছিল না। দলীয় ১৫ রানে ফেরেন লোকেশ রাহুল (২)। এরপর টেস্ট দলে সাত বছর পর ফেরা করুন নায়ারকে সঙ্গে নিয়ে ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল গড়েন ৮০ রানের জুটি। ফর্মে থাকা জয়সওয়াল এদিনও ছিলেন দারুণ ছন্দে। লিডসের মতো এখানেও সেঞ্চুরির পথে ছিলেন বাঁ-হাতি এই ব্যাটার, তবে থামতে হয় ৮৭ রানে। নায়ার অবশ্য জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি, আউট হন ৩১ রানে।
জয়সওয়ালের বিদায়ের পর মাঠে নামেন অধিনায়ক গিল। শুরুতে সামলেছেন চাপ, এরপর ছন্দে ফিরেছেন নিজের স্টাইলে। ঋষভ পান্ত (২৫) ও নিতীশ কুমার রেড্ডি (১) দ্রুত ফিরে গেলে ২১১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে ভারত। সেখান থেকে দলের হাল ধরেন গিল ও জাদেজা।
দিনের শেষ বিকেলে, ১৯৯তম বলে ক্যারিয়ারের সপ্তম টেস্ট সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন শুভমান গিল। ২১৬ বল মোকাবিলা করে ১২টি চারে সাজান তার ১১৪ রানের অনবদ্য ইনিংস। এই ইনিংসের মাধ্যমে গিল হয়ে উঠেছেন এক ব্যতিক্রমী অধিনায়ক। অধিনায়ক হিসেবে নিজের প্রথম দুই টেস্টেই সেঞ্চুরি করা চতুর্থ ভারতীয় তিনি। তার আগে এই কীর্তি গড়েছেন বিজয় হাজারে, সুনীল গাভাস্কার ও বিরাট কোহলি। তবে প্রথম তিন টেস্টেই সেঞ্চুরির অনন্য কীর্তি একমাত্র কোহলিরই।
শুধু তাই নয়, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টানা তিন টেস্টে সেঞ্চুরি করলেন গিল। এই কীর্তি ভারতের ইতিহাসে অধিনায়ক হিসেবে গড়েছেন মাত্র তৃতীয়বার। তার আগে এই তালিকায় নাম লিখিয়েছেন বিজয় হাজারে (১৯৫১-৫২ সালে) ও মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন (১৯৯০ সালে)। অধিনায়কত্বের বাইরে রাহুল দ্রাবিড় এবং দিলিপ বেঙ্গসরকারেরও রয়েছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টানা তিন শতকের কীর্তি।
একসময় তরুণ প্রতিভা হিসেবে উঠে আসা গিল এখন ভারতীয় ক্রিকেটের পরিণত নেতৃত্বের প্রতীক। এই ধারাবাহিকতা থাকলে ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ যে তার কাঁধে নির্ভর করে, সে বিষয়ে আর কোনো সন্দেহ থাকে না।