close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

আইএমএফ-এর সুপারিশ: বাজেটের কাঠামোগত সংস্কার ও অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় নতুন পদক্ষেপ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
আইএমএফ বাংলাদেশের বাজেট সংস্কারের পরামর্শ দিয়েছে, ভর্তুকি কমানো, সরকারি প্রকল্পের অপচয় রোধ এবং রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি করার জন্য। কাঠামোগত সংস্কার, ব্যাংক খাত পুনর্গঠন ও খেলাপি ঋণ আদায়ে সরকারের পদক্ষেপের ও..

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশের বার্ষিক বাজেটের কাঠামোগত সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আইএমএফ বিশেষত ভর্তুকি কমানো, সরকারি প্রকল্পগুলোর অপচয় রোধ, রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি এবং দেশের অর্থনৈতিক ঘাটতি কমিয়ে আনার জন্য বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছে। আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল বর্তমানে ঢাকা সফরে এসে এসব বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করছে।

আইএমএফ প্রতিনিধিদলটি আর্থিক খাত, ব্যাংক খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব খাতের সংস্কারের জন্য তাগিদ দিয়েছে। গতকাল অর্থ বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে আইএমএফ। একই সঙ্গে তারা সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে, খেলাপি ঋণ আদায় এবং ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও বৃদ্ধি করার বিষয়গুলোতে আরও কার্যকর সংস্করণ আনার জন্য।

আইএমএফের প্রতিনিধিদল সরকারকে জানায়, ট্যাক্স সংগ্রহ বৃদ্ধি এবং বাজেটের কাঠামোগত সংস্কারে পরিবর্তন আনলে, সরকারের মধ্যে আর্থিক সংকট কাটানো সম্ভব হবে। তবে, তারা সতর্ক করে দিয়েছে যে, এর জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। বিশেষত, রিজার্ভ বৃদ্ধি এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারে ক্রলিং পেগ পদ্ধতির প্রবর্তন করা উচিত বলে তারা পরামর্শ দিয়েছে। এর মাধ্যমে ডলারের বিনিময় হারের কোনো সীমানা না রেখে একটি মধ্যসীমা নির্ধারণ করা হবে, যা আগেও আইএমএফের পক্ষ থেকে সুপারিশ করা হয়েছিল।

অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জানান, "তাদের সফরের দ্বিতীয় দিনই আমরা নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। তবে, এখনো এই বিষয়ে কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তারা ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন এবং সফর শেষে একটি প্রতিবেদন জমা দেবেন।"

আইএমএফ প্রতিনিধিদলটির সঙ্গে আলোচনা করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, চলমান সংস্কার কার্যক্রম এবং আসন্ন বাজেটে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে—এসব বিষয়ে আইএমএফ জানতে চায়। এ সময় তারা সরকারের কাছ থেকে বাংলাদেশের রাজস্ব খাতের সংস্কার বিষয়ে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি কৌশলপত্র দেখতে চায়।

আইএমএফের প্রধান কর্মকর্তা রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদলটি ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকায় অবস্থান করবে। সফর শেষে তারা সরকারের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ও বাজেটের সংস্কারের অগ্রগতি সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন তৈরি করবে। এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আইএমএফ পরবর্তী ঋণ কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে।

আইএমএফের সুপারিশগুলোতে অন্তর্ভুক্ত:

  1. বাজেটের কাঠামোগত সংস্কার এবং ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনা

  2. ভর্তুকি পুরোপুরি তুলে দেওয়া

  3. জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয়ে স্মার্ট পদ্ধতি প্রচলন করা

  4. আন্তর্জাতিক নিয়মে রিজার্ভের হিসাব সংরক্ষণ করা

  5. কর-জিডিপি বৃদ্ধি করা

  6. ভ্যাট আইন-২০১২ (সংশোধিত) পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা

এ সব বিষয়গুলো বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের অর্থনীতি সংকট কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে বলে আইএমএফ মনে করছে। তবে, এসব শর্ত দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে, সরকারের আর্থিক সংকট আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।

এনবিআর-এর সৃজনশীল পদক্ষেপ
এনবিআর এবং অন্যান্য সরকারের দফতরগুলোকে নির্দিষ্ট পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ। আগামী জুনের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রশাসন ও নীতি উইং পৃথক করার সুপারিশ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি এবং নতুন পদক্ষেপের কার্যকর বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।

আইএমএফের পরামর্শগুলো যদি সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়, তবে দেশীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, বাংলাদেশের সরকারের জন্য আইএমএফের শর্ত পূরণ করা অত্যন্ত জরুরি, বিশেষত পরবর্তী ঋণের কিস্তি আদায়ের জন্য।

コメントがありません