আগে ইসরায়েল আগ্রাসন বন্ধ করুক, তারপর আলোচনার কথা আসবে: নাঈম কাসেম..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহার ও আগ্রাসন বন্ধ না হলে হিজবুল্লাহ অস্ত্র পরিত্যাগ তো দূরের কথা, কোনো আলোচনাতেই যাবে না—সাফ জানিয়ে দিলেন সংগঠনটির শীর্ষ নেতা নাঈম কাসেম।..

ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হলে আলোচনার প্রশ্নই ওঠে না: হিজবুল্লাহর হুঁশিয়ারি

দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহারের ২৪ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে হিজবুল্লাহর উপ-মহাসচিব শেখ নাঈম কাসেম স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা দিয়েছেন—ইসরায়েল যতক্ষণ না দক্ষিণ লেবানের দখলকৃত পাঁচটি সীমান্ত পয়েন্ট থেকে সেনা সরিয়ে নেয় এবং বিমান হামলা বন্ধ করে, ততক্ষণ পর্যন্ত হিজবুল্লাহ অস্ত্র পরিত্যাগ বা কোনো ধরনের আলোচনার পথে হাঁটবে না।

এই বক্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে, যখন ইসরায়েল-হিজবুল্লাহর সর্বশেষ সংঘর্ষের প্রায় ছয় মাস অতিক্রম করেছে। যদিও ওই সংঘর্ষের পর একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় উভয় পক্ষের দক্ষিণ লেবানন থেকে সেনা প্রত্যাহারের কথা ছিল, বাস্তবে পরিস্থিতি তার উল্টো। ইসরায়েল এখনো পাঁচটি সীমান্ত পয়েন্টে অনির্দিষ্টকালের জন্য সেনা মোতায়েন রেখেছে—সীমান্ত নিরাপত্তার অজুহাতে।

চুক্তি মানছে না ইসরায়েল, চলছে একতরফা আগ্রাসন

নাঈম কাসেম এ প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা যুদ্ধবিরতির সব শর্ত যথাযথভাবে পালন করছি। আমাদের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের উস্কানি বা সীমান্ত লঙ্ঘন হয়নি। কিন্তু ইসরায়েল প্রতিনিয়ত দক্ষিণ লেবানন এবং মাঝে মধ্যে বৈরুতের উপশহরগুলোতেও বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এভাবে চুক্তির শর্ত ভেঙে, আগ্রাসন চালিয়ে আর আলোচনার কথা বলাটা রীতিমতো প্রহসন।”

তিনি আরও যোগ করেন, “চুক্তি বাস্তবায়ন এবং আস্থা পুনঃস্থাপন ছাড়া কোনো আলোচনার সম্ভাবনা নেই। ইসরায়েলকে আগে দখলদারিত্বের অবসান ঘটাতে হবে, বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে এবং বিমান হামলা পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে। এর আগে কোনো নতুন চুক্তি বা আলোচনার প্রশ্নই ওঠে না।”

রাজনৈতিক সংকেত ও প্রতিরোধের বার্তা

হিজবুল্লাহর এই হুঁশিয়ারি শুধু সামরিক নয়, বরং একটি রাজনৈতিক বার্তাও বহন করে। এটি লেবাননের জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে একটি স্পষ্ট ঘোষণা যে, তারা একতরফাভাবে কোনো চাপ মেনে নেবে না। দক্ষিণ লেবাননের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত হিজবুল্লাহর প্রতিরোধ অব্যাহত থাকবে।

আঞ্চলিক উত্তেজনার নতুন মাত্রা

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বক্তব্যের মাধ্যমে হিজবুল্লাহ আবারও নিজেদের অবস্থান শক্ত করে তুলেছে। যুদ্ধবিরতি কিংবা অস্ত্রবিরতি তখনই সম্ভব, যখন ইসরায়েল তার আক্রমণাত্মক কৌশল বন্ধ করবে এবং চুক্তির প্রতিটি ধারা বাস্তবায়ন করবে। নতুবা যে কোনো সময় দক্ষিণ লেবাননে আবারও সহিংসতা শুরু হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

ইসরায়েলের বর্তমান নেতৃত্ব এখনো কৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকে সীমান্ত অঞ্চলে অবস্থান বজায় রাখতে আগ্রহী। তবে হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে এমন কড়া হুঁশিয়ারি পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলতে পারে।

শেষ কথা

নাঈম কাসেমের বক্তব্যে স্পষ্ট যে, এখন আর কথার সময় নয়—এখন কাজের সময়। ইসরায়েল যদি সত্যিই শান্তি চায়, তবে আগে তাদের নিজেই চুক্তি মানতে হবে। একতরফা আগ্রাসন চালিয়ে হিজবুল্লাহকে চাপে ফেলার কৌশল ব্যর্থ হবে—এই বার্তা হিজবুল্লাহ স্পষ্ট করে দিয়েছে।

کوئی تبصرہ نہیں ملا