অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামীকাল বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে যাচ্ছেন। জাতির সামনে এ ভাষণটি দেওয়া হবে দুপুরে, যা বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), বিটিভি নিউজ, এবং বিটিভি ওয়ার্ল্ড–এর মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে বলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং নিশ্চিত করেছে।
দেশজুড়ে এখন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে যে অস্থিরতা বিরাজ করছে, সেই প্রেক্ষাপটে এই ভাষণটিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সূত্রমতে, প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন বিষয়ে জনগণের উদ্দেশে স্পষ্ট ঘোষণা দিতে পারেন।
সরকারের অভ্যন্তরীণ একটি সূত্র জানিয়েছে, এই সনদের মাধ্যমে দেশের প্রশাসনিক, নির্বাচন এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে দুর্নীতি দমন, স্বচ্ছতা বৃদ্ধি, এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য কিছু প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার পরিকল্পনা ঘোষণা করা হতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণে জাতীয় সংলাপ, অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মপরিকল্পনা, এবং ভবিষ্যৎ নির্বাচনী কাঠামো সম্পর্কেও দিকনির্দেশনা দিতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে, চলমান রাজনৈতিক সংলাপ এবং নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণ নিয়ে তার দিকনির্দেশনা আগামী দিনের রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
জনগণের প্রত্যাশা, ড. ইউনূস তার ভাষণে দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধির বিষয়েও কথা বলবেন। সাম্প্রতিক সময়ে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কমে যাওয়া এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকটের প্রেক্ষাপটে তার অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি জানতে উদগ্রীব সবাই।
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও এই ভাষণকে ঘিরে আগ্রহ দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন এই অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপগুলো ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের সম্ভাব্য মূল পয়েন্টগুলো নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ধারণা করা হচ্ছে, ভাষণটি দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি মাইলফলক বার্তা হয়ে উঠতে পারে।
আগামীকাল দুপুরে জাতির সামনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস কী ঘোষণা দেন, সেটাই এখন সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু।



















