আছিয়ার বাড়িতে সেদিন যা ঘটেছিল: মুখ খুললেন সারজিস আলম
ধর্ষণের শিকার শিশু আছিয়া গত বৃহস্পতিবার মারা যাওয়ার পর তার জানাজায় অংশ নিতে মাগুরায় যান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। জানাজা চলাকালীন তিনি মোবাইলের নোটিফিকেশন চেক করছিলেন, যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ নিয়ে শুরু হয় নানা আলোচনা-সমালোচনা।
শনিবার দুপুরে এই প্রসঙ্গে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি বিস্তারিত পোস্ট করেন সারজিস আলম। তিনি জানান, আছিয়ার মৃত্যুর পরপরই তিনি পুলিশ প্রশাসনকে দ্রুত আসামি গ্রেফতারের জন্য বলেন এবং ধর্ষণ মামলার বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি জানান।
বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত করার আহ্বান সারজিস আলম তার পোস্টে উল্লেখ করেন, হাইকোর্ট থেকে ঘোষণা এসেছে ধর্ষণ মামলার বিচার ১৮০ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে। তবে তিনি মনে করেন, এত দীর্ঘ সময় ধরে বিচার প্রক্রিয়া চললে অনেক ক্ষেত্রেই মানুষ তা ভুলে যায় এবং অপরাধীদের যথাযথ শাস্তি দিতে বিলম্ব হয়। তাই তিনি বিচার ব্যবস্থার আরও দ্রুত কার্যকর করার আহ্বান জানান।
মেডিকেলে আছিয়ার খোঁজ-খবর নেওয়া তিনি বলেন, আছিয়াকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হলে তিনি সেখানেও যান। তবে ইনফেকশনের ঝুঁকি থাকায় তিনি আইসিইউতে প্রবেশ করেননি, বরং বাইরে থেকেই চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে খোঁজখবর নেন। এরপর জরুরি ভিত্তিতে আছিয়াকে সিএমএইচে স্থানান্তর করা হলে তিনি সেখানেও উপস্থিত হন। সিএমএইচের নিয়ম অনুযায়ী আইসিইউতে প্রবেশ নিষেধ থাকায় তিনি বাইরে থেকেই খোঁজ নেন।
জানাজার দিন মোবাইল চেক করা নিয়ে বিতর্ক সারজিস আলম বলেন, জানাজার জন্য তিনি মাগুরায় পৌঁছান বিকেল সাড়ে পাঁচটায়, যেখানে জানাজা ছিল সন্ধ্যা সাতটায়। এই সময়ের মধ্যে তিনি ওয়েটিং রুমে অপেক্ষা করছিলেন এবং কিছুক্ষণ মোবাইলের নোটিফিকেশন চেক করেন। এই মুহূর্তের একটি ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল করা হয় এবং ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হয় যে তিনি পুরো সময় মোবাইলেই ব্যস্ত ছিলেন। তিনি বলেন, সংবাদ মাধ্যমগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে একটি নির্দিষ্ট মুহূর্তকে তুলে ধরে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ার সমালোচনা তার বক্তব্য অনুযায়ী, কিছু মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় অযৌক্তিক সমালোচনা করে এবং ভুল তথ্য প্রচার করে। তিনি বলেন, যারা মাঠে নেমে কাজ করেন, তাদের সম্পর্কে ধারণা না নিয়েই অনেকে বড় বড় বিশ্লেষণ করতে থাকেন। তিনি আরও বলেন, "দিনশেষে যেকোনো পরিস্থিতিতে আমরাই মাঠে দৌড়াই, অথচ সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের কার্যক্রমকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়।"
সারজিস আলম তার পোস্টের শেষে বলেন, "আগামীতে সমালোচকদের উচিত হবে অনলাইনে মন্তব্য করার আগে বাস্তব জীবনে কিছু ইতিবাচক উদাহরণ স্থাপন করা। আমরা তখন সেটাই অনুসরণ করব