close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

৭০% জনগণের যু'দ্ধ'বি'রোধী মনোভাব উপেক্ষা করে নে'তা'নিয়াহুর আ'গ্রা'সী নী''তির পথে ই'স'রা'য়ে..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইসরায়েলের ৭০ শতাংশ মানুষ যুদ্ধবিরোধী অবস্থানে থাকলেও প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় হামলা বন্ধের কোনো ইঙ্গিত দিচ্ছেন না। নারী-শিশুদের লাশের পাহাড়, ধ্বংসস্তূপে পরিণত জনপদ—সব উপেক্ষা করে তিনি ..

গণচাহিদা উপেক্ষা করে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন নেতানিয়াহু

গাজা উপত্যকার ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া প্রতিটি প্রান্তে আজ শুধু কান্নার শব্দ। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৫১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। তবুও এই ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যেও যুদ্ধ থামানোর কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না ইসরায়েলি নেতৃত্বে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক ভিডিও বার্তায় পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন—গাজায় যুদ্ধ চলবে যতদিন না তারা বিজয় অর্জন করছে। তার কথায়, “হামাস যদি তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে, তবে বোমাবর্ষণই আমাদের একমাত্র পথ।”

যদিও ইসরায়েলের প্রস্তাব ছিল গাজাকে অস্ত্রমুক্ত করা, তাতে ছিল না স্থায়ী যুদ্ধবিরতির কোনো নিশ্চয়তা। এ কারণেই হামাস প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেছে। নেতানিয়াহুর মতে, হামাসের দাবি মেনে নিলে, ইসরায়েলের সেনাদের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে। তিনি তার বক্তব্যে একবারও আহত শিশু, নিহত মা, কিংবা বিধ্বস্ত পরিবারের প্রসঙ্গ তোলেননি।

ইরানকেও টার্গেট করলেন নেতানিয়াহু

যুদ্ধ থামানোর প্রশ্নে নেতানিয়াহু কঠোর অবস্থানে থাকলেও তিনি ইরানের দিকেও ইঙ্গিত করেছেন। বলেছেন, তিনি নিশ্চিত করতে চান—ইরান কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র না পায়। একইদিনে রোমে ওয়াশিংটন ও তেহরানের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে নেতানিয়াহুর এই মন্তব্য নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে আন্তর্জাতিক মহলে।

নিহতের সংখ্যা বাড়ছেই, নিরাপদ অঞ্চলেও হামলা

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় ইসরায়েলের হামলায় নিহত হয়েছেন ৯০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি। শনিবার রাতেই নিহত হয়েছেন আরও ১৫ জন—যাদের মধ্যে ১১ জন খান ইউনিসে এবং ৪ জন রাফায়। নিহতদের মধ্যে বহু নারী ও শিশু রয়েছে।

বিশেষ করে মুয়াসি এলাকার ঘটনায় সমালোচনা আরও জোরালো হয়েছে, কারণ এই অঞ্চলকে আগেই ‘নিরাপদ এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিল ইসরায়েল। অথচ সেখানেও ভয়াবহ হামলা চালানো হয়েছে, যা যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক।

ইসরায়েলি সেনার মৃত্যু এবং পাল্টা প্রতিক্রিয়া

এমন পরিস্থিতিতে শনিবার উত্তর গাজায় এক ইসরায়েলি সেনা নিহত হন, যেটি যুদ্ধবিরতির পর প্রথম কোনো ইসরায়েলি সেনার মৃত্যুর ঘটনা। হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসেম ব্রিগেড এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।

এই ঘটনায় সরকার গাজায় হামলার মাত্রা আরও বাড়াবে কিনা, তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে ইসরায়েলের অভ্যন্তরেও।

জনগণের বিপরীতে সরকার

ইসরায়েলের নিজস্ব জনগণও এখন নেতানিয়াহুর এই যুদ্ধনীতি মেনে নিতে পারছে না। সম্প্রতি তেল আবিবে এক বিশাল বিক্ষোভে যুদ্ধবিরতির দাবি উঠে আসে। সেখানে বক্তব্য রাখেন জিম্মি অবস্থা থেকে মুক্ত হওয়া ওমের শেম তোভ, যিনি সরাসরি বলেন, “তাদের এখনই ফিরিয়ে আনুন। যুদ্ধ থামাতে হলে থামান।”

আরও চমকপ্রদ তথ্য হলো—সাবেক ও বর্তমান সামরিক সদস্যদের হাজার হাজার স্বাক্ষরিত চিঠি সরকারকে পাঠানো হয়েছে, যেখানে যুদ্ধ বন্ধের দাবি স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে।

চ্যানেল ১২ নিউজ পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, প্রায় ৭০ শতাংশ ইসরায়েলি নাগরিক মনে করেন, যুদ্ধ থামিয়ে হলেও জিম্মিদের মুক্ত করা উচিত। কিন্তু এই গণচাহিদা এবং মানবিক আবেদন উপেক্ষা করেই নেতানিয়াহু সরকার গাজায় আরও রক্তপাত চালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

উপসংহার

এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর এখন নেতানিয়াহুর ‘যুদ্ধ-পিয়াসী’ মনোভাবের দিকে। ফিলিস্তিনের জনপদ একের পর এক ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, আর তাতে ইসরায়েলের অভ্যন্তরেও প্রশ্ন উঠছে—এই যুদ্ধের শেষ কোথায়?

যখন জনগণ, সামরিক বাহিনী, এমনকি জিম্মি পরিবারের সদস্যরাও যুদ্ধবিরতির দাবি জানাচ্ছেন, তখন নেতানিয়াহু কেনো এত অন্ধভাবে আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছেন? এই প্রশ্ন এখন কেবল ইসরায়েলের নয়, গোটা বিশ্বের।

कोई टिप्पणी नहीं मिली