close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

৫০ হাজার টাকা নিয়ে হিন্দু কলেজ ছাত্রীকে অপহরণের পর ধর্ষণ শেষে প্রেমিকের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে..

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা avatar   
২৭ এপ্রিল সকাল ১১টার দিকে সাতক্ষীরার খাজরা ইউনিয়নের একটি কলেজের ছাত্রীকে অপহরণ করে প্রেমিকের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় প্রকাশ্যে ফোন করে মাঠের পাশে মুদি দোকানের সামনে দাঁড়াতে বলেন..

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা :

৫০ হাজার টাকা নিয়ে হিন্দু কলেজ ছাত্রীকে অপহরণের পর রাতভর ধর্ষণ শেষে প্রেমিকের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। গত ২৭ এপ্রিল সকাল ১১টার দিকে সাতক্ষীরার খাজরা ইউনিয়নের একটি কলেজের সামনে থেকে ওই ছাত্রীকে অপহরণ করা হয়।

আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া গ্রামের কিশোরী মণ্ডলের ছেলে রণজিৎ মণ্ডল জানান, খাজরা ইউনিয়নের একটি কলেজের একাদশ শ্রেণীর মানবিক বিভাগের ছাত্রী ও তারই এলাকার এক দিন মজুরের মেয়ের সঙ্গে সম্প্রতি প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাকে বিয়ে করতে চাইলেও সাহস পাচ্ছিলেন না তিনি। একপর্যায়ে তিনি ওই মেয়েকে বিয়ে করিয়ে দেওয়ার জন্য স্থানীয় আব্দুল খালেক সানার ছেলে মফিজুল ইসলাম ওরফে ময়েজ সানার শরনাপন্ন হন। এজন্য ময়েজ সানাকে কয়েক দফায় ৫০ হাজার টাকা দেন তিনি।

ওই কলেজ ছাত্রী জানান, গত ২৭ এপ্রিল সকাল ১১টার দিকে প্রভাষক বিপ্র মণ্ডল তাদের ক্লাস নিচ্ছিলেন। এ সময় রণজিৎ তাকে ফোন করে মাঠের পাশে মুদি দোকানের সামনে দাঁড়াতে বলেন। সে অনুযায়ি তিনি বাবা বাড়ি থেকে তাকে ফোন করেছে মর্মে অনুমতি দিয়ে মাঠের পাশের নিদ্দিষ্ট দোকানের পাশে চলে আসেন। এ সময় রণজিতের কথা বলে তাদের এলাকার মফিজ সানা (৩০) ও একই এলাকার রদিয়ার রহমান সানার ছেলে আবু বক্কার সানা (২৭) একটি মোটর সাইকেলে করে তাকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে মফিজ সানা তার ফোন বন্ধ করে দেয়। পরে তাকে তার বড় ভাই হাবিবুল্লার শ্বশুরবাড়ি সদর উপজেলার ঘুটিরডাঙিতে নিয়ে আসে। রাতে আবু বক্কর ওই বাড়ির ছাদে অবস্থান করলেও মফিজ তাকে একটি ঘরে রেখে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাতভর কয়েকবার ধর্ষণ করে। পরদিন সকালে মফিজ ফোন করে তাকে (ছাত্রী) রণজিতের হাতে তুলে দেয়। সেখান থেকে সাতক্ষীরা আদালতের আইনজীবী অ্যাড. আলী আকবরের সহায়তায় রণজিৎ ও তার বিয়ে দেওয়া হয় এফিডেফিডের মাধ্যমে। তার উপর যৌন নিপীড়নের বিষয়টি রণজিৎকে বলা হয়। রণজিৎ বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য মোক্তার সানাকে অবহিত করে। মোক্তার তার বাবাকে বিষয়টি জানান। রণজিৎ তাকে ময়মনসিংহের একটি ইটভাটায় নিয়ে যায়। ১২ মে তারা গ্রামে ফিরে আসে।

ওই ছাত্রীর বাবা জানান, মেয়েকে অপহরণের পর ধর্ষণ করার বিষয়টি তিনি জানতে পেরে মফিজ ও আবু বক্কর এর বিরুদ্ধে তিনি মামলা করতে চেয়েছিলেন থানায়। সেটা সম্ভব না হওয়ায় তিনি আদালতে যেয়ে জানতে পারেন যে, সংশ্লিষ্ট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারক প্রায় এক মাস যাবৎ আদালতে আসছেন না। আবার তার স্থলে ভারপ্রাপ্ত বিচারক নতুন কোন মামলা ফাইলিং নিচ্ছেন না। বাধ্য হয়ে সাতক্ষীরা আমলী আদালতে মফিজ ও আবু বক্করের নামে তিনি মামলা (সিআর-১৯৭/২৫ আশা) করেছেন। আদালত মামলাটি তদন্ত করে ২৫ জুনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

তবে আনুলিয়া গ্রামের সাহেব আলী, রজব আলীসহ কয়েকজন জানান, মফিজ সানা ও তার কয়েকজন সহযোগী গত বছরের ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পর থেকে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে চাঁদাবাজিসহ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।  তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।

এ ব্যাপারে মফিজুল ইসলাম সানা ওই কলেজ ছাত্রীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য রণজিতের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার না করেই বলেন, ২৭ এপ্রিল রণজিৎ ও ওই মেয়ে আদালতে এফিডেফিডের মাধ্যমে বিয়ে করে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করেছে। তাহলে তাকে নিয়ে তিনি কিভাবে রাতে আটকে রেখে ধর্ষণ করলেন। 

তার কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে মীর্জাপুরের জনৈক সাহাবুদ্দিন জানান, মফিজুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা। পত্রিকায় ছাপা হলে প্রতিবাদ দেওয়া হবে।

আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সামছুল আরেফিন জানান, এ ধরণের কোন অভিযোগ নিয়ে থানায় কেউ আসেনি। আবার কোন মামলার কপি ও তিনি পাননি। পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Nessun commento trovato